ভবনগুলো অপরিকল্পিত সিডিএর অনুমোদন নেই

চলছে ভাঙার কাজ, বাসিন্দাদের সড়ক অবরোধ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

নগরীর স্ট্র্যান্ড রোডে গুলজার খালের পাশে হেলে পড়া ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে তিনতলা ভবনটির হেলে পড়া অংশের ভাঙার কাজ শুরু করে শ্রমিকরা। সিডিএ বলছে, ভবনগুলো পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়নি। এছাড়া সিডিএ থেকে অনুমোদনও নেই। এদিকে গতকাল সকালে সড়ক অবরোধ করেছেন ভবনের বাসিন্দারা। সকাল ১১টার দিকে হেলে পড়া ভবনগুলোর নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ সকলে স্ট্র্যান্ড রোডে অবস্থান নেন। সড়ক অবরোধের সময় হুইল চেয়ারে বসা দুই বৃদ্ধার পোস্টারে লেখা ছিল ‘আমার শেষ আশ্রয় কোথায়?’ ‘জীবন বাঁচার উপায় চাই’। ভবনের বাসিন্দারা বলছেন, আমাদের বাড়িঘরে খালের কোনো জায়গা নেই। সিটি কর্পোরেশনের গাইড ওয়ালের বাইরে নিজেদের জায়গায় আমরা ঘর বানিয়েছি।
গত সোমবার সদরঘাট থানাধীন স্ট্র্যান্ড রোডের পার্বতী ফকির পাড়া এলাকায় পার্শ্ববর্তী গুলজার খালের পাড়ে নির্মিত দুটি ভবন ও একটি মন্দির হেলে পড়ে। ভবন দুটির মধ্যে একটি তিনতলা ও একটি দ্বিতল। একটি ভবনের মালিক সন্তোষ দাশ ও অপরটির মালিক স্বপন কুমার দাশ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সিডিএর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে পাশের একটি খালে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না রেখে রিটেইনিং ওয়ালের জন্য পাইলিং করছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এতে নিচের দিকের মাটি সরে গিয়ে ভবন দুটি হেলে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবনের মালিক সন্তোষ দাশ বলেন, গত দুই-তিন বছর ধরে খালে ওয়াল নির্মাণের কাজ করছে। সোমবার সকালে কোনো সাপোর্টিং ছাড়াই ওয়াল নির্মাণের জন্য স্কেভেটর দিয়ে মাটি খোঁড়া শুরু করে। আমরা এসব ভবনের জন্য নিয়মিত পৌরকরও দিচ্ছি। আমার ভবনটি করেছি মাত্র দুই বছর হয়েছে। আমরা অল্প আয়ের মানুষ। এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? তিনি বলেন, আমরা বারবার কাজের সাইট ইঞ্জিনিয়ারদের বলেছি, তারা কর্ণপাত করেননি। এখন আমরা ১৫ পরিবার খোলা আকাশের নিচে আছি।
গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক কুতুব উদ্দিন বলেন, সোমবার দিবাগত রাত ২১টা ৫ মিনিটে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। তখন ভবন দুটি প্রায় এক ফুট হেলেছিল। এখন প্রায় তিন ফুটের বেশি হেলে গেছে। এখানে দুটি ভবন ও একটি মন্দির রয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনগুলোর চারদিকে ‘বিপজ্জনক’ লেখা ফিতা দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ধসে পড়ার ঝুঁকির মধ্যেও তিনতলা ভবনটি ভাঙার কাজ করছে শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে ভবনটি আরও হেলে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভবন ভাঙার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
ঘটনাস্থলে সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসান বলেন, ভবনগুলো পরিকল্পিতভাবে নির্মিত হয়নি। সিডিএ থেকে অনুমোদনও নেই। খালের পাশে যে ফাউন্ডেশন দিয়ে ভবন করার কথা ছিল, তাও করা হয়নি। এগুলো আন্ডার ডিজাইন বিল্ডিং। আশেপাশে কাজ করতে গিয়ে ভবনগুলো হেলে গেছে।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিষয়ে দেখে সিটি কর্পোরেশন। আমরা আপাতত ভবন দুটি সিলগালা করে দেব। ঝুঁকিটা একটু কমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব। বাকিটা সিটি কর্পোরেশন ব্যবস্থা নেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংলাপ নিয়ে বিএনপির সুর বদল
পরবর্তী নিবন্ধসরকারের দ্রুত পদক্ষেপে করোনা বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারেনি : প্রধানমন্ত্রী