আমি বরাবর মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণি পাশ করার পর থেকেই বলতে গেলে বিজ্ঞানের সঙ্গে কঠিন আড়ি, জনমের ছাড়াছাড়ি। বিজ্ঞান বিভাগের সহপাঠীদের কী ভাব! ‘মানবিকের ঐসব পড়া নাকি’! আমরাই বা কম যাই কেন? বিজ্ঞান একটা অমানবিক বিষয়। কোথায় যেন পড়েছিলাম– ‘বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ’– সময়ে অসময়ে বিজ্ঞানের বিপক্ষে ছোঁড়ার জন্য মোক্ষম অস্ত্র পেয়ে যাই আর কী। এই অস্ত্র বিজ্ঞানের বিপক্ষে নাকি বিজ্ঞান পড়ুয়া ভাবদেখানো বন্ধুদের বিপক্ষে, তা অবশ্য গবেষণাসাপেক্ষ। তো বিজ্ঞান পাঠে ইস্তফা দিলেও, প্রাণভরে, দু’হাত বাড়িয়ে বিজ্ঞানের আশীর্বাদ গ্রহণেতো বাধা নেই। দিনের শুরুতে চোখ মেলার পর থেকে সারা দিনমানের কর্মব্যস্ততায়, এমনকি মাঝরাতে চোখ বোজার পরও সেবা দিয়ে যায় বিজ্ঞান। বিষয়টা এভাবে ভেবেই দেখা হয়নি এতকাল। ডঃ মুহাম্মদ ইব্রাহীমের ‘বিজ্ঞান জিনিসটি কী ; ভেবে দেখা ও দেখে জানার ইতিহাস’ বইটি হাতে আসার পর শিরোনাম দেখে চমৎকৃত হতে হয়। বিজ্ঞানকে জানতে হলে জানতে হবে ইতিহাস! তবে কী বিজ্ঞান অমানবিক নয়? ভূমিকার দ্বিতীয় অনুচ্ছেদেই উত্তর মেলে– বিজ্ঞান মানবিক। ঝরঝরে সাহিত্যের মতো সুখপাঠ্য ভূমিকা শেষে সূচিপত্র দেখে বিষয়বস্তু আরও পরিষ্কার– ‘বিজ্ঞান একেবারেই মানবিক’। প্রথম অধ্যায়ের পুরো পঞ্চাশ পাতা জুড়ে তারই বয়ান।
সহজ সরল গল্প বলার ঢঙে বলে যান লেখক বিজ্ঞানের মাহাত্মের কথা, প্রয়োজনীয়তার কথা। বিজ্ঞান কিন্তু যাদুমন্ত্রবলে পাওয়া কোনো শক্তি নয়, দীর্ঘ সময় ধরে চলা অনেক সাধনার ফল। বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ বা চলচ্চিত্রে উপস্থাপিত সবকিছু বিজ্ঞান নির্ভর না–ও হতে পারে। সেখানে কল্পনার মিশেল থাকে, জনপ্রিয়তা ও লগ্নিকৃত অর্থ তুলে এনে বাড়তি লাভের আশায়। গণমাধ্যমে বিজ্ঞানের আবিষ্কার সংক্রান্ত খবর কিংবা বিতর্কগুলো ফলাও করে প্রচার করা হয় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে খবরের কাটতি বাড়ানোর জন্য। ফলে বিজ্ঞানের সঠিক বার্তা সম্পর্কে জানা সাধারণ পাঠক বা দর্শকের পক্ষে সম্ভব হয় না। বিশ্লেষকগণ আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক সময় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ফেলেন, যার পরিণতিতে আস্থার সংকটে পড়ে যায় বিজ্ঞান। এ–রকম নকল বিজ্ঞান থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে চান লেখক। বিজ্ঞানের ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য গোড়া থেকে জানা জরুরি। লেখক বলেছেন, বিজ্ঞানের ইতিহাস মানুষের সাধারণ ইতিহাসেরই অংশ।
বিজ্ঞানের আবেদন সার্বজনীন, বিশ্বজোড়া। কোন গোপনীয়তা থাকতে নেই বিজ্ঞানে। তবে বিশেষজ্ঞদেরও ভুল হতে পারে। বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে চাঞ্চল্যকর ডিএনএ গবেষণা অনেকদূর এগিয়ে যাবার পর বিশ্বখ্যাত রসায়নবিদ লিনাম পলিং (যিনি প্রোটিনের গঠন আবিষ্কার করে খ্যাতি পেয়েছিলেন) এর গবেষণা তত্ত্বের ভুল ধরা পড়ে তাঁরই অনুজ বিজ্ঞানিদের চোখে। পলিং–এর জন্য তা মেনে নেওয়া কষ্টসাধ্য ছিল। ব্যাপারটা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার জন্য তিনি তাই তরুণ বিজ্ঞানীদের গবেষণাগার পরিদর্শনে যান। বিস্ময়ে হতবাক পলিং; তার শেখানো পদ্ধতিতেই কাজ করছিলেন তরুণ গবেষকদ্বয়। অথচ শেষমেশ তার তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হয়, আর তরুণদেরটা উৎরে যায়। বর্ষীয়ান রসায়নবিদ হার মেনে নেন আর নবাগত কীর্তিমানদের অভিবাদন জানান। ডিএনএ গবেষণায় প্রোটিন, ক্রিস্টাল কিংবা হেলিক্সের গঠন, টিনের পাত দিয়ে অণুর মডেল– এসব ভারী ভারী কথা সব বোধগম্য না হলেও মুহাম্মদ ইব্রাহীম ডিএনএ আবিষ্কারকে কেন্দ্র করে বিশ্বখ্যাত গবেষকদের খোলামেলা প্রতিযোগিতা ও প্রীতিপূর্ণ সহযোগিতার যে দুর্দান্ত গল্প উপস্থাপন করেছেন তাতে পেশাগত সম্পর্কের মাঝে এক দারুণ মানবিক দিক ফুটে উঠেছে, যে–কারণে বিজ্ঞানকে লেখক ‘পাবলিক নলেজ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বিজ্ঞান চর্চায় ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা বাঞ্ছনীয়। বিজ্ঞান পাঠককে বিজ্ঞানের ঐতিহাসিক পটভূমি এবং পদ্ধতিগুলোর বিবর্তনের ইতিহাস জানতে হবে। নতুবা বিজ্ঞান পাঠ উপভোগ্য হবেনা। ইতিহাস পাঠেও তাই; ধারাবাহিকতা না থাকলে সব কেমন খাপছাড়া মনে হয়! যে কোন ঘটনার আলোচনা পর্যালোচনার ভিত্তিতেই রচিত হতে পারে নির্ভরযোগ্য ইতিহাস। তত্ত্ব, তথ্য, যুক্তিতর্কের সঠিক প্রয়োগ আর নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ নির্ভরযোগ্য ইতিহাস রচনার পূর্বশর্ত। বিজ্ঞানের বেলায়ও তাই। উদাহরণ হিসেবে লেখক জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে গবেষণার আদিকথা থেকে শুরু করে হাজার বছরের পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের সংগ্রহশালার ভূমিকার কথা বিবৃত করেছেন। মহাকাশ তথা মহাবিশ্বের জ্যোতিষ্কমন্ডলী, গ্রহ–নক্ষত্র, দিন, মাস, বছর গননার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার সময় সকল দেশের সকল কালের জ্যোতির্বিদগণ অগ্রজদের রেখে যাওয়া সংগ্রহশালা থেকে সাহায্য নিয়েছেন, তথ্য নিরীক্ষণ করেছেন এবং সবশেষে ফলাফলে উন্নীত হয়েছেন। তবে সেই ফলাফল কিন্তু সবসময় চূড়ান্ত ফলাফল নয়। নতুন গবেষণায় পুরনো অনেক বিষয় ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই বলে পুরনো গবেষণা মিথ্যে হয়ে যায়নি, কিংবা নতুন গবেষণাও থেমে থাকেনি। হাজার বছর আগে আবিষ্কৃত টলেমীর (গ্রিক) পৃথিবী কেন্দ্রিক তত্ত্বের ভুল ধরা পড়ে পোলিশ বিজ্ঞানী কোপার্নিকাসের গবেষণায় আধুনিক যুগের শুরুতে। মহাকাশ ও জ্যোতিষ্কমন্ডলী সম্পর্কিত গবেষণা আরও এগিয়ে নিয়ে যান জার্মান জ্যোতির্বিদ কেপলার। তাঁর পর্যবেক্ষণের ফল নিয়ে আরও কাজ করেন ইংরেজ গণিতবিদ নিউটন।
আলোচ্য গ্রন্থের লেখক জ্যোতির্বিজ্ঞানের উৎস ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কিত যে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস রচনা করেছেন তাতে দেখা যায়, নতুন গবেষকদের কেউ প্রাচীন আবিষ্কারকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেননি। উপরন্তু আজকের মতো অবাধে তথ্যপ্রবাহের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও দেশ হতে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়েছিল আবিষ্কারের কথা। ব্যবিলন, মিশর, প্রাচীন চীন, ও ভারতে জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা হত। এ থেকে বিজ্ঞানীদের ইতিহাসপ্রিয়তার পরিচয় পাওয়া যায়।
পৃথিবীর জন্ম ও অবস্থান এবং জীবজগত নিয়ে মানুষের ভাবনাকে বারবার বদলে দিয়েছে বিজ্ঞান। কোপার্নিকাস তো সূর্যকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছিলেন যেখানে মানুষও এই বিশ্ব ছবির এক সাধারণ উপাদান। অনেককাল পরে ডারউইন শুনিয়েছিলেন বিবর্তনবাদের কথা। বিশ শতকের ‘বিগ ব্যাং’ মহাবিশ্বের জন্ম বিষয়ে নতুন মাত্রা যোগ করে। তবে সেটাই শেষ কথা নয়। অপার অনুসন্ধিৎসা নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা চলছেই, জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ হচ্ছে পৃথিবীর। পৃথিবীর বাইরেও কি বিস্তার লাভ করছে এই জ্ঞান ! টলেমী, কোপার্নিকাস, কেপলার, নিউটনদের উত্তরসূরিরা নিশ্চয় তা খুঁজে বের করবেন, একদিন না একদিন।
বিজ্ঞানকে লেখক সামাজিক বিষয় হিসেবে দেখিয়েছেন। তা হতেই হবে; বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সবকিছুতো সমাজের মানুষদের জন্যই। তাছাড়া আধুনিক সমাজ জীবন ব্যাপকভাবে প্রযুক্তিনির্ভর, আর প্রযুক্তি অতি অবশ্যই বিজ্ঞাননির্ভর। তাই সমাজে বিজ্ঞানের অবদান সীমাহীন। হাজার বছর আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ বর্ষপঞ্জী, পঞ্জিকার উদ্ভাবন করেছিলেন, যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল সমাজের মানুষের চাষাবাদের পরিক্রমা। বর্তমানে বিজ্ঞান গবেষণার ব্যয় বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক সম্মতির প্রয়োজন হয়। তাই সমাজের একটা প্রত্যক্ষ প্রভাব থেকে যায় গবেষণাকারীদের ওপর। তাই বলে সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত নিয়ে গণতন্ত্রের মতো কোন তত্ত্ব উপস্থাপন করা যাবে না। সহজ সোজা পথ আর সামঞ্জস্য বজায় রাখা ছাড়া কাঙ্ক্িষত ফল অর্জিত হবে না।
বিজ্ঞান যত জটিল বিষয় নিয়ে কাজ করুক না কেন, দিনশেষে বিজ্ঞানী কিন্তু একজন মানুষ, যার মাঝে সকল মানবিক গুণাবলী (দোষাবলীও নিশ্চয়!) লুকানো থাকে। তবে সাধারণ মানুষের তুলনায় বিজ্ঞানী মানুষগণ আমাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন, আমাদের ভাবনা ও দৃষ্টিকে বিশ্বময় প্রসারিত করতে পারেন। এটাই বিজ্ঞানের যাদু।
বিজ্ঞান যে সবসময় ছকে বাঁধা গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করে সোজা পথে এগিয়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। প্রসঙ্গক্রমে লেখক প্রথম এন্টিবায়োটিকের টোটকা পেলিসিলিন আবিষ্কারের পেছনের চমকপ্রদ গল্প উপস্থাপন করেছেন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের কোন এক সকালে গবেষণাগারে গিয়ে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং অপার বিস্ময়ে লক্ষ করেন যে পরীক্ষার জন্য রাখা জীবাণুদের একপাশে ছত্রাক জমে গেছে, আর ছত্রাকের আশেপাশের জীবাণু সব মরে গেছে। তিনি তখন মূল কাজ ফেলে ছত্রাক নিয়ে কাজে নেমে পড়লেন। ফলাফল হিসেবে আবিষ্কৃত হল জীবাণুনাশক পেনিসিলিন। লেখকের ভাষায়, “ফ্লেমিং এর ল্যাবরেটরিটি যদি আর একটু সাফ–সুতরো হতো, আবিষ্কারটি হয়তো তখন ঘটতোইনা” (পৃ ২৯)।
আধুনিক নাগরিক জীবনের ঘরে ঘরে অতি প্রয়োজনীয় খাবার গরম করার যন্ত্র, যাকে আমরা ‘মাইক্রোয়েভ ওভেন’ বলি; এই ওভেন আবিষ্কারও কাকতালীয়, যার সূচনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতম সময়ে। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রু বিমানের অবস্থান নির্ণয় করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত মাইক্রোয়েভ রাডার। তাই নিয়ে গবেষণাগারে কাজ করছিলেন পার্সি স্পেনসার। বুক পকেটে রাখা চকলেট গলে যাওয়ায় ভাবনায় পড়ে যান তিনি। তিনি দেখলেন, রাডার বন্ধ থাকলে চকলেট স্বাভাবিক থাকে, আবার চালু হলেই গলে যায় চকলেট। এরপরের দিনগুলোতে এই নিয়েই লেগে থাকেন স্পেনসার, আর অবশেষে মাইক্রোয়েভ রাডার ব্যবহার করে আবিষ্কার করে ফেলেন দুর্দান্ত যন্ত্র মাইক্রোয়েভ ওভেন। কোটি কোটি রাঁধুনির আশীর্বাদ পাওনা স্পেনসারের।
ইতিহাসের শিক্ষার্থী বলেই হয়তোবা যখনই উদাহরণ হিসেবে কোন গল্পের অবতারণা করা হয়েছে, বিশেষ করে সন–তারিখ উল্লেখ করে, তখনই বাড়তি আগ্রহ ও আনন্দ লাভ হয়েছে এই গ্রন্থ পাঠে। যেমন– প্রাচীন মিশরের কৃষকেরা বংশপরম্পরায় দেখে আসছিল একটি বিশেষ জাতের অতিথি পাখি যে অল্প সময়ের জন্য ওদের এলাকায় আসে তখনই গমের বীজ বপন করা হলে ভাল ফসল ঘরে তোলা যায়। পরিযায়ী পাখির আগমনের সঙ্গে গমের ফলনকে কৃষকরা সম্পৃক্ত করে ফেলে, এবং তারা সেই পাখিটার প্রতিক্ষায় থাকে। কিন্তু একবার গমের ফলন ভাল হলো না। কৃষকের মাথায় হাত। প্রকৃতপক্ষে পাখির দেশের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তার মিশর ভ্রমণের সময় বদলে গেল, কৃষকদের কাছে তা বোধগম্য ছিলনা। আবহাওয়া, উত্তাপ, ঋতুপরিবর্তন ফসল উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা রাখে, কোন পরিযায়ী পাখি নয়। তাই প্রাচীন মিশরের কৃষক দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত সত্য হিসেবে ধরে নিয়ে যা বিশ্বাস করত, তা আসলে বৈজ্ঞানিক চিন্তা ছিল না।
সরলতার মধ্যেই লুকানো থাকে সৌন্দর্য, এই সাধারণ কথাটা মানবচরিত্রের জন্য অবশ্য প্রযোজ্য বলা যায়। একই সঙ্গে প্রকৃতির বেলায় যেমন সত্য, তেমনি সত্য বিজ্ঞানের বেলাতেও। কোপারনিকাসের তত্ত্ব হাজার বছরের বিশ্বাসকে সরিয়ে নতুন মত প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছিল কেবল তার সারল্য ও সৌন্দর্যের জন্যই, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিজ্ঞানের এই সৌন্দর্যই বিজ্ঞানকে করেছে মানবিক।
ড. ইব্রাহীমের বিজ্ঞান জিনিসটি কী গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি বিজ্ঞানের কাজ প্রকৃতির ধর্ম ও গতিবিধি নিরীক্ষণ করা এবং তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের জন্য তত্ত্ব নির্ধারণ করা। শত সহস্র বছরের গবেষণার ফল আজকের আধুনিক পৃথিবী; বিশ্বায়নের এই যুগে এই পৃথিবীটা আমাদের হাতের মুঠোয়। তাই বলে বিজ্ঞানের সব রহস্য ভেদ করা হয়নি, কোনদিন হবেও না। এই ‘না’ তথা অমীমাংসিত রহস্যই পৃথিবীর বিজ্ঞান চর্চার ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখবে। আলোচ্য গ্রন্থটিতে ইতিহাসের স্বাদ, গন্ধ ও আমেজ পাওয়া যায়। একজন পদার্থবিজ্ঞানীর রচনা হলেও তাই ইতিহাস তথা মানববিদ্যার যে–কোন শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্য হতে পারে আলোচ্য গ্রন্থটি।