কঠোর লকডাউনের ৫ম দিনে নগরীর রাস্তাঘাটে বেড়েছে জনসমাগম। বাজারে মানুষের ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষদের মাঝে অনীহা ছিল চোখে পড়ার মতো।
রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের কাঁচাবাজারে দেখা গেছে মানুষের ভিড়। বাজারের প্রত্যেকটি গলিতে ছিল মানুষ। সামাজিক দূরত্ব, কিংবা মাস্ক পড়ার কোন নিয়মই পরিলক্ষিত হয়নি বাজারটিতে। রমজান মাস, লকডাউন চলছে। তাই দিনের বেলা কেনাকাটা করতে রিয়াজ উদ্দিন বাজারে গিয়েছেন নালাপাড়ার আবু কায়ছার। তিনি বলেন, ‘এখানে যেভাবে মানুষ কেনাকাটা করছে, তাতে মনে হচ্ছে কারো মাঝে আতংক নেই। আমি নিজে ভয়ে থাকলেও বাধ্য হয়ে সবজি, মাছ-মাংস কিনতে এসেছি।’
বাজারের দোকানদার আলী হোসেনের মুখে মাস্ক ছিল না। এ নিয়ে ক্রেতাদের মাঝেও অস্বস্তি নেই। অন্য দোকানের মতো আলী হোসেনের কাছ থেকেও সবজি কিনছে ক্রেতারা। আলী হোসেন বলেন, ‘মাস্ক আছে। সকাল থেকে মাস্ক মুখে রাখতে রাখতে হাঁপিয়ে উঠেছি। গরমও পড়ছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম। তাই মাস্ক খুলে রেখেছি।’ এ দোকানি বলেন, ‘লকডাউনে অফিস আদালত বন্ধ থাকলেও কারো তো খাবার বন্ধ নেই। লোকজনকে বাধ্য হয়েই বাজারে আসতে হচ্ছে। সব বন্ধ করে দিলেও বাজারে মানুষের আসা বন্ধ করা দুরূহ হবে।’
শুধু রিয়াজ উদ্দিন বাজার নয়, নগরীর কাজির দেউড়ি বাজার, বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার, কামাল বাজার, পাহাড়তলী কাঁচা বাজার, সাবএরিয়া অস্থায়ী বাজারে ছিল ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি। এছাড়া নগরীর প্রায় রাস্তায় ভাসমান সবজি ও ফলের দোকান থেকেও কেনাকাটা সারতে দেখা গেছে নগরবাসীদের। নগরীর ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জেও ছিল গাড়ির জটলা। পণ্য খালাস করতে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যানজটেও পড়তে হয়েছে খাতুনগঞ্জের মুল সড়ক ব্যবহারকারীদের।
এদিকে রোববার আগের চারদিনের চেয়ে সড়কে যানবাহনের উপস্থিতি ছিল বেশি। বেড়েছে রিকশার সংখ্যা। রাস্তায় নেমেছে সিএনজি অটোরিকশা ও কয়েকটি রুটের বাস-মিনিবাসও। পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যানগুলো স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলাচল করেছে। রোববার বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ি, ওয়াসা, দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কোতোয়ালী, নিউ মার্কেট, লালখান বাজার, টাইগারপাস. দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ মোড়ে দেখা গেছে রিকশা, বাইকের জটলা। মূল সড়কের বাইরের নগরীর বেশিরভাগ সড়কে প্রাইভেট কার জিপের পাশাপাশি সিএনজি অটোরিকশা, হাইচ, মাইক্রোতে লোকজনকে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া কদমতলী, মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড রোড, পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় ছিল ট্রাক কাভার্ড ভ্যানের উপস্থিতি।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল হতে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এর আগে গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করলেও সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী দোকানপাট, গণপরিবহন চলাচল করে নগরীতে। কিন্তু কঠোর লকডাউনে দোকানপাট ও গণপরিবহনের চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়। তবে খোলা শিল্প কারখানা শ্রমিক পরিবহনের জন্য অনুমতি সাপেক্ষে গাড়ি চলাচলের সুযোগ দেয়া হয়।