কাঁচা বাজার এখন নানা ধরনের সবজিতে ভরপুর। বিশেষ করে শীতকালীন সবজির দাপটে প্রায় সব সবজির দাম কমলেও ব্যতিক্রম কেবল আলু। অথচ সব সময় এই সবজিটিই কম দামে পাওয়া যেতো। এমনকি বাজারে নতুন আলুর আগমনীতেও কোনো ধরনের প্রভাব পড়ছে না। খুচরা বাজারে এখনো আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকার উপরে। অবশ্যই গত তিনদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে আলু দাম কেজিতে ২ টাকা কমেছে।
জানা গেছে, চলতি বছর তুলনামূলকভাবে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। এছাড়া করোনাকালে প্রচুর পরিমাণ আলু ত্রাণ হিসেবে বিলি বণ্টন করা হয়েছে। ফলে হঠাৎ করে দেশে আলুর সংকট দেখা দেয়। তবে সম্প্রতি বাজারে সরবরাহ বেড়েছে নতুন আলুর। গতকাল চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আলুর আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৭ টাকা এবং নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন আলো দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে মাত্র নতুন আলু আসা শুরু হয়েছে। সরবরাহ বাড়লে পুরাতন আলুর দাম আরো কমে যাবে। এখন পাইকারিতে দাম নিম্নমুখী রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই সময়ে আলুর কোনো ধরনের সংকট নেই। তারপরেও একশ্রেণির ব্যবসায়ী অতিমুনাফার আশায় বেশি দামে আলু বিক্রি করছেন। গত বছরের এই সময়ে পাইকারিতে আলু বিক্রি হয়েছে কেজি ১৫ টাকা দরে। অথচ এখন দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। কোল্ড স্টোরেজরা মালিকরা আলুর কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আলুর দাম ধরে রেখেছেন।
কোল্ড স্টোরেজের মালিকরা জানান, প্রতি বছর দেশে এক কোটি টন আলু উৎপাদিত হচ্ছে। এরমধ্যে দেশে ব্যবহার হয় ৭০ লাখ টনের মতো। বাকি ৩০ লাখ টন আলু প্রতি বছর উদ্বৃত্ত থাকছে। চলতি বছর করোনাকালে ত্রাণ হিসেবে আলুর ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়া এবং মালয়েশিয়া, নেপালসহ বিভিন্ন দেশে আলুর রপ্তানি বাড়ার কারণে দেশে সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে নগরীর কাজীর দেউরির খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে আলুর বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। খুচরা বিক্রেতা মো. সাইফুদ্দীন সুমন জানান, আমরা এখনো পুরাতন ৪৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করছি। অনেক দিন ধরে এই দরে বিক্রি করছি। পাইকারিতে দাম কমলেও আমরাও কমিয়ে দিব। এছাড়া নতুন আলু বিক্রি করছি ৭০ টাকায়।
বেসকারি চাকরিজীবী মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, শুনেছি বাজারে নতুন আলু এসেছে। তারপরেও পুরনো আলুর দাম না কমাটা বিস্ময়কর। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাব আলুর আড়তে যেনো আবারও অভিযান চালানো হয়।