দেশের সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ সোমবার। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর দুই দেশের মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে এটাই হবে প্রথম সীমান্ত সম্মেলন।
গতকাল রোববার বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ৫৫তম এই সীমান্ত সম্মেলন হবে। এ সম্মেলন গত নভেম্বর মাসে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের কারণে তিন মাস পিছিয়ে এ বছর ফেব্রুয়ারিতে নতুন সূচি রাখা হয়। বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে অংশ নেবে। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, ভূমি জরিপ অধিদপ্তর এবং যৌথ নদী কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকবেন বৈঠকে। খবর বিডিনিউজের।
বিএসএফ মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল এ সম্মেলনে যোগ দেবে। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও দেশটির স্বরাষ্ট্র এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকবেন। সবশেষ ২০২৪ সালে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক হয়।
বিজিবি বলছে, সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের ওপর গুলি, সীমান্ত হত্যা–আহত–আটক–অপহরণ রোধ, ভারত থেকে মাদক, অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ দ্রব্যের চোরাচালান, বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়াসহ অননুমোদিত অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ এবং চলমান অন্যান্য উন্নয়ন কাজ নিষ্পত্তির নিয়ে আলোচনা হবে উভয় দেশের।
পাশাপাশি ভারতের আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউড়ার দিকে প্রবাহিত সীমান্তবর্তী চারটি খালের বর্জ্য পানি অপসারণে উপযুক্ত পানি শোধনাগার স্থাপন, জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর সাথে রহিমপুর খালের মুখ উন্মুক্তকরণ, আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ক্যাম্পের সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের বিষয়টিও থাকবে আলোচনার টেবিলে।
সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও পারস্পরিক আস্থা–সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়াসহ নানা বিষয় আসবে আলোচনায়। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে।