বাঁচল না নদী

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ২৩ এপ্রিল, ২০২২ at ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ

চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে সিংহ সম্রাটের কামড়ে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন স্ত্রী সিংহ নদী অবশেষে মারাই গেল। গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে পার্কের বেষ্টনীতে নদী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। এ ঘটনায় পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

মাজহারুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে পার্কের স্ত্রী সিংহ নদী শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে মারা গেছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সিংহ নদীকে সুস্থ করে তুলতে পার্ক কর্তৃপক্ষের চেষ্টার কমতি ছিল না। এজন্য দুটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এরইমধ্যে বিশেষ একটি ভাইরাসেও আক্রান্ত হয়ে পড়ে নদী। এতে আর বাঁচানো যায়নি তাকে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সঙ্গনিরোধকালে (সেক্সুয়াল মিট) পুরুষ সিংহ সম্রাট কামড় দেয় নদীকে। এতে নদীর গলায় বড় চোট লাগে। এরপর থেকে নদীর গলার ক্ষতস্থান থেকে অনবরত পানি ঝরতে থাকে। এই অবস্থায় নদীর চিকিৎসায় দুটি মেডিকেল বোর্ড গঠনসহ বিশেষজ্ঞ একাধিক ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি তাকে। পিসিআর ল্যাব ও মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্রাটের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ট্র্যাঙ্কুলাইজের পর নদীর সিরাম ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে ১২ এপ্রিল ল্যাবের পরীক্ষার ফলাফল এবং মেডিকেল বোর্ডের মতে, সিংহ নদীর শরীরে ভাইরাল ইনফেকশন হয়েছে বলে জানানো হয়। যা ফেলিন লিউকেমিয়া ভাইরাস হিসেবে শনাক্ত হয়।

শেষপর্যন্ত সেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নদীর জীবনাবসান হয়েছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে মারা যাওয়া স্ত্রী সিংহ নদীসহ পার্কে বিপরীত লিঙ্গের সিংহ ছিল দুই জোড়া। তদ্মধ্যে সম্রাট ও নদী দম্পতির মধ্যে পারিবারিক কলহ শুরু হয় গত ২ ফেব্রুয়ারি। নির্দিষ্ট বেষ্টনিতে থাকাবস্থায় ওইদিন তারা মারামারিতে (কামড়াকামড়ি) লিপ্ত হলে উভয়েই আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তবে বেশি চোট পায় পুরুষ সিংহ সম্রাট। তখন পার্কের বন্যপ্রাণি হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন শেডে আলাদা করে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলে সুস্থ হয়ে উঠে উভয়েই। কিন্তু ১৭ দিনের মাথায় ১৯ ফেব্রুয়ারি এই দম্পতি বেষ্টনিতে আবার মারামারি করলে সিংহ নদীর গলার নিচে রক্তাক্ত জখম হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধান দুই আসামি গ্রেপ্তার স্বীকারোক্তি
পরবর্তী নিবন্ধওরা ছাগল চোর