বয়স ৩৫ হয়ে গেছে। কিন্তু পারপরম্যান্সে তার কোন ছাপ নেই। তারপরও ফুটবলের রাজপুত্র মেসি বলেছিলেন এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। আর সে বিশ্বকাপকে রঙাতে সবকিছু করে যাচ্ছেন লিও। মেসি শেষ বিশ্বকাপ খেলছেন। যা এতদিন ছিল অনেকের কাছে অনুমান আর ধারণা। সেটিই এবার নিশ্চিত করে জানা গেল। লিওনেল মেসি নিজেই জানিয়ে দিলেন, পরের বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না তাকে। কাতারের ফাইনাল ম্যাচই হবে বিশ্বকাপে আর্জেন্টাইন জাদুকরের শেষ ম্যাচ।
বিশ্বকাপে ৩৬ বছরের খরা ঘোচানোর আশায় মেসির ভেলায় ভেসে এগিয়ে চলেছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে গত মঙ্গলবার রাতে তার আরও একটি দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে ফাইনালে পা রাখে আর্জেন্টিনা। ৩৫ বছর বয়সী মেসি চার বছর পরের বিশ্বকাপে থাকবেন না বলেই অনুমিত ছিল। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ শেষে আর্জেন্টনাইন সংবাদ মাধ্যম দিয়ারিও দেপোর্তিভো ওলে এর সঙ্গে কথোপকথনে তিনি নিশ্চিত করে দিলেন তা।
বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলে আমার বিশ্বকাপ ভ্রমণ শেষ হবে। এই অর্জনে আমি খুবই খুশি। পরের বিশ্বকাপ অনেক বছর পরের ব্যাপার। আমার মনে হয় না আমি তা খেলতে পারব। বরং এভাবে শেষ করতে পারাই সেরা ব্যাপার। গত বিশ্বকাপে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিলেও এবার মেসির অসাধারণ পারফরম্যান্সে আর্জেন্টিনা পৌঁছে গেছে স্বপ্নপূরণের খুব কাছে। তিনি নিজেও একের পর এক রেকর্ড আর অর্জনে রাঙাচ্ছেন নিজেকে। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডে তিনি নাম লিখিয়েছেন লোথার ম্যাথিউসের পাশে। ফাইনালে জার্মান কিংবদন্তিকে ছাড়িয়ে মেসিই উঠে যাবেন শীর্ষে। দুজনই পাঁচটি করে বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে খেলেছেন ২৫টি করে ম্যাচ। ফাইনালে নামলেই মেসির হয়ে যাবে ২৬ ম্যাচ। তিনি এককভাবে উঠে যাবেন শীর্ষে।
এছাড়াও আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেছেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। মেসির গোল এখন ১১টি। বাতিস্তুতার ছিল ১০টি। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট এর রেকর্ডও তিনি নিজের করে নিয়েছেন মেসি ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে। ২৫ ম্যাচে ৮টি এসিস্ট করেছেন তিনি। আর ম্যারাডোনাও করেছেন ২১ ম্যাচে ৮টি এসিস্ট।
বিশ্বকাপে সবচাইতে বেশি ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন মেসি। একজন ফুটবলারের জীবনে আর কি চাই। এখন বাকি কেবল বিশ্বকাপটা জেতা। সেটা জিতলেই মেসির ক্যারিয়ার হবে সোনায় সোহাগা। আর সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি দলকে নিয়ে। মেসি বলেন এসব অর্জন খুব ভালো ও দারুণ। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দলীয় লক্ষ্য অর্জন করা। সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার এটিই। অনেক লড়াইয়ের পর আমরা মাত্র একটি পদক্ষেপ দূরে আছি এবং এটা অর্জন করতে নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেব আমরা। কারণ কথায় আছে না ‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’।