সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডে একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় জয়নাল আবেদীন (২৯) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার ভোরে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় অভিযান চালিয়ে জয়নালের স্ত্রী লিমা আক্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিহত জয়নালের বাড়ি উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামে। জয়নাল-লিমা দম্পতির দুটি মেয়ে আছে।
সকালে প্রতিবেশীদের লিমা আকতার জানান, গভীর রাতে তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গেছেন প্রতিবেশী শাহাদাত হোসেন। এরপর তিনি আর ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। খবর শুনে স্থানীয় লোকজনও তাকে খুঁজতে বের হয়। এরই মধ্যে লিমা পালিয়ে যান। এতে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় লোকজন জয়নাল আবেদীনের বসতঘরে গিয়ে মেঝেতে রক্ত দেখতে পান। পরে এটি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হয়ে জয়নালের লাশ ও লিমাকে খুঁজতে শুরু করেন তারা। সকাল ৭টার দিকে পাশের তাহেরী পাড়ার তেলীবাড়ির ইরান বাদশার পুকুরে জয়নালের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। জয়নালের পেটের ডান পাশে ছুরির জখমের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী লিমা আকতার (২৪) এই হত্যাকাণ্ডের
সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয় লোকজন ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী রিমা আক্তারের সঙ্গে প্রতিবেশী শাহাবুদ্দিনের পুত্র শাহাদাত হোসেন কাইয়ুমের পরকীয়া চলে আসছিল। এনিয়ে কয়েক দফায় সালিস বৈঠকও হয়েছে। দুদিন আগেও এ নিয়ে বৈঠক হয়। ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রিমা ও তার প্রেমিক শাহাদাত মিলে তাকে হত্যা করেছে।
স্থানীয় বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ইয়াছিন আরাফাত মুন্না আজাদীকে বলেন, গত কয়েক দিন আগেও কালা মিয়ার স্ত্রী ও শাহাদাতের পরকীয়ার বিষয়ে এলাকায় শালিসী বৈঠক হয়েছে। ভোরে নামাজ পড়তে উঠলে এলাকাবাসী আমাকে কালা মিয়াকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান। পরে খোঁজাখুঁজি করে পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দিই। এরপর পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা লিমা ও শাহাদাত মিলে জয়নালকে হত্যা করেছেন। সকালে লিমা একটি ব্যাগ নিয়ে গাড়িতে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে বাড়বকুণ্ড বাজার এলাকা থেকে আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রেমিক শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা হবে।











