পাগলের সাঁকো

জাহাঙ্গীর আজাদ | রবিবার , ৬ জুন, ২০২১ at ৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

কাক যেমন খড় কুটো কুড়োয়, তারাও ক’জন
পাগলা কিসিমের লোক সারাবছর ধরে কিছু খুঁটি,
তরজার বাঁশ, রসিকাছি আর কিছু শ্রম জড়ো করে।
যোগাড় যন্ত্রের দোনোমোনায় মোক্ষম সময়ের
অনেকটা পার হয়ে যেতে যেতে অবশেষে এক চৈত্র দুপুরে
দখিন পাড়ের প্রথম খুঁটিটি পোঁতা হয়।

পরের দিন আরেকটি খুঁটি, তৃতীয়দিন এক পাগলের পায়ে
কাঁকড়াবিছেয় কাটে, ঝাড়ফুঁকে দিন বয়ে যায়,
পরের এগারো দিনে আরো ছ’টি খুঁটি।
বিষয় বুদ্ধি ও বিত্তে সম্পন্ন দু’পাড়ের এতোদিন যারা
অলস কৌতুকে পাগলের তামাশা দেখেছে, তারা আজ
নড়ে চড়ে বসে, চোখে চোখে কী কথা যে হয়!

বৈশাখের মাঝামাঝি এক বিষ্যুদবারে হাটুরেরা দেখে
দখিন থেকে উত্তর, খালটির এপাড় ওপাড় সব খুঁটি
সটান দাঁড়িয়ে আছে, শুধুমাত্র তরজার ছাউনিটুকু বাকি,
আসা যাওয়ার পথে হাটুরেদের মুখে মুখে
পাগলের সাঁকো।
পাগলদের জড়ো করা শক্তি আর উদ্যম ক্ষয়ে ক্ষয়ে
এতোদিনে তলানিতে ঠেকে, তাই নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে
বোনা হতে থাকে পাগলের সাঁকো, তার ছাদের কাঠামো।

অবশেষে বৈশাখের ঘুটঘুটে এক রাতের পরে সূর্য ওঠে,
সকালে খালের পাড়ে পাগলদের একজন শূন্যচোখে দেখে
জড়ো করা ছাউনির বাঁশ, তরজার বেড়া, দড়িদড়া
ভোজবাজির মতো কোথায় মিলিয়ে গেছে
একটিমাত্র রাতের আঁধারে।

এরপর বর্ষা আসে, খালভর্তি ঘোলাজলে খুঁটিগুলো ঠাঁয়
দাঁড়িয়ে ভিজে, দখিন আর উত্তর নির্বাক পৃথক পড়ে থাকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজানি আর হবে না দেখা
পরবর্তী নিবন্ধনৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্র্থীদের জন্য টিউশন ফি-তে বিশেষ ছাড়ের সিদ্ধান্ত