সরবরাহ বাড়ায় পাইকারিতে কমছে চিনির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) চিনির দাম কমেছে ১৮৮ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির চিনির পাশাপাশি অবৈধ পথে ভারত থেকে প্রচুর চিনি প্রবেশ করছে। যার ফলে বর্তমানে বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। তবে ভোক্তারা বলছেন, চিনির দাম এখনো সহনশীল পর্যায়ে আসেনি। ভোক্তাদের এখনো প্রতিকেজি চিনি কিনতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৮৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৩৮ টাকায়। খাতুনগঞ্জের কয়েকজন চিনির আড়তদার জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটি বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয় তার বাজারদর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্য আসেনি, কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলে কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন আজাদীকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে চিনির বাজার নিম্নমুখী। বাজারে চিনির সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, দেশের বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে চিনির দাম ওঠানামা করছে। এটি গত কয়েক মাস ধরে ১৩০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ সরকারের নজরদারি বাড়ানো গেলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কারণ আমাদের দেশে গুটিকয়েক চিনি আমদানিকারক আছেন। তারা নির্দিষ্ট কিছু ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে চিনি বিক্রি করেন। সরকার চাইলে ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য ধরে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেসবের কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় কৃত্রিম সংকট তৈরির সুযোগ পাচ্ছেন।