চট্টগ্রাম নগরীর পরীর পাহাড় থেকে সব সরকারি অফিস সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শুরু হয়েছে ৪৪টি সরকারি অফিস একই কম্পাউন্ডে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া। চট্টগ্রামের নন জুডিশিয়াল সরকারি বিভিন্ন অফিস কালুরঘাটে বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির পাশের ৭৬ একর জায়গায় স্থানান্তরিত হবে। নতুন স্থানে অফিস ভবনসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনার নির্মাণ কাজ আগামী বছরের আগস্ট মাসের দিকে শুরু হবে।
সূত্র জানায়, নগরীর প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র পরীর পাহাড়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জনশক্তি কার্যালয়, এডিএম কোর্ট, রেকর্ড রুমসহ সরকারের বিভিন্ন অফিস রয়েছে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানেও রয়েছে সরকারি নানা অফিস। সরকারি অফিসগুলোতে মানুষের বিভিন্ন কাজ থাকে। এসব কাজের জন্য ছোটাছুটি করতে হয়। এতে ভোগান্তি হয়। মানুষের ভোগান্তি হ্রাসের জন্য সরকার সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণ নামের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের পরীর পাহাড়সহ বিভিন্ন স্থানে থাকা ৪৪টি সরকারি অফিস একই কম্পাউন্ডে নিয়ে আসার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পের আওতায় কালুরঘাট সেতুর কাছে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে ৭৬ একর জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গত মার্চে পরিদর্শনে আসে। তারা বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির পাশের ওই স্থানটি চিহ্নিত করে। ইতোমধ্যে এই ভূমিতে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, এডিএম কোর্ট, রেকর্ড রুম, সার্কিট হাউজ, সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, শপিং মল, মাল্টি স্টোরেড কার পার্কিং, লেকসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করতে চট্টগ্রামে আসছে। ২৪ সেপ্টেম্বর সার্কিট হাউজে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের রোডম্যাপ এবং ডিজাইন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। আগামী বছরের আগস্ট ৯ম পৃষ্ঠার ৩য় কলাম
মাস নাগাদ প্রকল্পটির অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তিন বছরের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর চট্টগ্রামের সব সরকারি অফিস এখানে স্থানান্তরিত হবে। কর্ণফুলী পাড়ের ওই স্থানটির নান্দনিকতা রক্ষা করে অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, ওই এলাকাটিকে শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। শপিং মল থেকে শুরু করে নানা কিছু ওখানে নির্মিত হবে। সরকারি অফিসে মানুষের ভোগান্তি কমাতে ওই ক্যাম্পাসেই ৪৪টি অফিসের কার্যক্রম চলবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, মানুষের ভোগান্তি কমাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন। সব অফিস একই ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হলে মানুষের ভোগান্তি কমবে। কাজে গতি আসবে। তিনি বলেন, পরীর পাহাড়কে হেরিটেজ ঘোষণা করা হবে। এরই অংশ হিসেবে পরীর পাহাড় থেকে সরকারি অফিস সরিয়ে নেওয়ার এই প্রক্রিয়া।