নীরবতা আর জীবনচিহ্ন পাওয়ার অপেক্ষা

তুরস্ক সিরিয়া ধ্বংসস্তূপ

| বুধবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত সোমবার ভোরের দিকে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এই ভূমিকম্পে তুরস্কের পাশাপাশি সিরিয়াতেও বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল গাজিয়ানতেপ অঞ্চলে।

ভূমিকম্পের কেন্দ্রের দিকে যাওয়া সহজ নয়। প্রধান প্রধান মহাসড়কগুলো নিরাপদ নয়, উদ্বেগ রয়েছে। ঘুরানো পাহাড়ি পথে সবকিছু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধার দল পাঠানোর জোর চেষ্টা চলছে। তবে ওই এলাকা ছেড়ে আসা লোকজন বহনকারী ট্রাকের বিপরীতে আটকে পড়ছে। সড়কপথে ফাটল রয়েছে, ভাঙা, অসমান। এসবের কারণে এই সংকটময় মুহূর্তে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

যতই কেন্দ্রস্থলের দিকে যাওয়া যায়, দেখা যায়ধ্বংসের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। এখনও আফটারশক অনুভূত হচ্ছে। ফলে লোকজন ভবনের পাশে থাকতে চাচ্ছে না। আফটারশক টের পেলেই লোকজন দৌড়াচ্ছে। এখন পর্যন্ত ভেঙে পড়া অনেক ভবনে উদ্ধারকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এটি ধারণা করা যায় না যে, ভবনগুলো ফাঁকা ছিল। উদ্ধারচেষ্টা বড় বড় ভবনকে ঘিরেই কেন্দ্রীভূত। ধারণা করা হয়, এসবের মধ্যে অনেক লোক রয়েছে। খবর বাংলানিউজের।

যা ঘটেছে, তাতে লোকজন নির্বাক। তারা দাঁড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে নিজেদের উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন আর উদ্ধারকাজ দেখছেন। ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় কিনা, তা শুনতে তারা একেবারে নীরব হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। রাতে অনেকটা অন্ধকারের মধ্যেই এক বাসিন্দাকে দেখা যায় ধ্বংসস্তূপে কিছু খোঁজাখুঁজি করতে। তার বিশ্বাস, কেউ হয়তো বেঁচে আছেন। তিনি বলছিলেন, কেউ থাকলে জোরে সাড়া দাও। তিনি বলেন, মরদেহ পড়ে আছে। একজন মারা গেছেন। কেউ তাকে সরায়নি। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে একজন নারীর কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে। তিনি কথা বলছেন, আর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নারীকণ্ঠে কান্না ভেসে আসছে। তিনি কেঁদেই যাচ্ছেন, আর ধাতুতে আঘাতের মাধ্যমে শব্দ করে বাসিন্দার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।

তবে ওই বাসিন্দা একা কিছুই করতে পারছেন না। পুরো বাড়ি ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই ধ্বংসাবশেষ সরাতে ভারী যন্ত্রাদির প্রয়োজন। এটি একটি উত্তরহীন কান্নার গল্প। এমন গল্প এই অঞ্চলে বারবার শোনা যাচ্ছে।