নারী দুই বর্ণের এক মাধুর্যপূর্ণ শব্দ। শব্দটা উচ্চারণেই সকলে মনটা সত্যিই এক হিমশীতল আনন্দ অনুভব করে। ভেসে ওঠে এক সৌন্দর্যের ধারক। শব্দ টা উচ্চারণ করতে কারো মনে ভেসে ওঠে তার কোন প্রেয়সী ছবি কিংবা পরম মমতায় গাল স্পর্শ করা মায়ের ছবি। নারী শব্দটা ওতেই আটকে রয়েছে। বাস্তবে অর্থে নারীরা কোন কালেই দুর্বল কিংবা হীনতার ধারক ছিলো না। কিন্তু কালক্রমে তা আমাদের পুরুষ শাসিত মস্তিষ্কে এখন খোদাই করা। জন্মগতভাবে তা কেউ পায় না। জন্মের পর থেকে পরিবারের নারীদের যেমন ব্যবহার আর সম্মান পেতে দেখে তা থেকে তারা ধীরে ধীরে খোদাই করে ফেলে মস্তিষ্কের উপরি স্তরে। যুগের প্রবর্তন কাল থেকে নারীর সর্বত্র বিচরণ ছিলো স্বর্ণাক্ষরে। তখন নারীকে নিজের খাবার নিজেকেই সংগ্রহ করতে হতো। তখনকার নারীরাও শারীরিকভাবে কোন ভাবেই দুর্বল ছিলো না। কাল ক্রমের সুশীল সমাজ এর রচনায় যুগে যুগে নারীদের সৌন্দর্যের উপমায় বসিয়ে রাখা হয়েছে বেদীতে। তখন বানানো হয়েছে নিয়ম, তোলা হয়েছে বাধা। সময়ের কালগ্রোতে নারীরা বাহিক্য সকল বাধা ধুলোতে মিশিয়ে এখন সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছালেও। কিন্তু আমরা নারীরা এখনো চিনতেও পারি নি আমাদের অভ্যন্তরীণ বাধাকে। কোন পুরুষ যখন দাবী করে না সে পুরুষ তাও সে পারে। তাহলে আমি নারী আমি পেরেছি বলে দাবী করাটা কি সত্যিই অপ্রয়োজনীয় নয়? অনেকে বলবে নারীদের বাধা বেশি। হ্যাঁ। আমিও জানি। কিন্তু বাধা তো সকল ক্ষেত্রে, তখন আমরা নারীরা সেসব ঘর, সংসার, বাচ্চা এইসব বাধাকে বড় করে না দেখে তুচ্ছ কিছুর পাশ কাটিয়ে যাবো তবেই না সেসব বাধার গুরুত্ব দিন দিন কমে যাবে। তখন তাই নিয়মে পরিণত হবে। শাড়ি ছেড়ে জিন্স পরাতে আমি নারী হওয়ার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি বলে ভাবাটা সত্যিই কি বোকামি নয়? আজ নারী দিবস বাস্তবিক অর্থে সেসব নারীদের জন্য যারা নিজেকে নারী নিজের সাফল্যকে অধিক কিছু না ভেবে নিজের যোগ্যতা কে অন্যের থেকে অধিক ভাবে। আমাদের নারীদেরকেই নিজেদের বাধাগুলোকে তুচ্ছ করতে হবে। আকড়ে ধরাবাধাগুলো গুরুত্ব পেয়ে বাড়বে ভয়, কমবে না। তবেই তুচ্ছ হবে সব বাধা, পরিণত হবে নিয়মে।