বই হলো মানুষের অনুভূতির ঘরে প্রবেশ করার অন্যতম চাবি। বইয়ের মত এত বিশ্বস্ত বন্ধু আর নেই। জ্ঞান আহরণ করার আশা নিয়ে মানুষ বই কেনে। বই পড়ার আকাঙ্ক্ষা যার ভিতর একবার চলে আসে, তিনি যেভাবেই হোক সেটা পড়বেই। আর এই বই কেনার জন্য যে অর্থ–ব্যয় হয়, অর্জিত জ্ঞানের তুলনায় তা খুব নগণ্য। বিশ শতকের সূচনায় মুসলিম সাহিত্য সমাজের দার্শনিকগণ বলেছিলেন, জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব। তাদের ধারণা অনুযায়ী জ্ঞানের সীমানা বাড়াতে, বুদ্ধিকে বন্ধনহীন করতে, আর মানুষের মুক্তি আনতে বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই মানুষের জ্ঞানচক্ষু খুলে দিয়ে মনের জগৎকে প্রসারিত করে। কূপমণ্ডুকতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব। মূল কারণ তার মন আছে। এই মনের মাধ্যমে মানুষ তার চারপাশের জগতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলে। তার মধ্যে ভালো–মন্দের ধারণা সৃষ্টি করে, নৈতিকতার জন্ম দেয় বই। এমনকি তার নিজের ভাষায় রচিত বই গড়ে তোলে তার নিজস্ব সংস্কৃতি। এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি আস্থা তৈরি করে বই। মানুষের অভিজ্ঞতা ও প্রমাণ–লব্দ জ্ঞান বইয়ের মধ্যে সঞ্চিত থাকে। বই থেকে আহরিত জ্ঞান সে নিজে যেমন আলোকিত হতে পারে, অন্যকেও আলোকিত করতে পারে। বই মানুষের প্রকৃত বন্ধু, নিজেকে সমৃদ্ধ করতে বই কেনার ও তা পড়ার কোনো বিকল্প নেই।