নগরীর দামপাড়ায় নির্মাণাধীন মেরিডিয়ান ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সাড়ে ৪টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। গত দুই বছর ধরে ভবনটির নির্মাণ অসমাপ্ত অবস্থায় পড়েছিল। সম্প্রতি আবার কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে ভবনটিতে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়ার কুণ্ডলী অনেক উপরে পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এতে আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ভবনটির পাশে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের (বাওয়া স্কুল) বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। আগুন লাগার খবরে পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষার্থী শিশুদের খোঁজ নিতে অভিভাবকরা স্কুলের ভেতরে ঢুকে পড়ে। আগুন লাগার পরপরই ওই নির্মাণাধীন ভবন সংলগ্ন মূল সড়কে যানজট লেগে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য মতে, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত জ্বলন্ত সিগারেট থেকে। নির্মাণাধীন ভবনটির নবম তলায় রাখা অব্যবহৃত চট ও প্লাস্টিকের বস্তার পেছনে শ্রমিকদের সিগারেটের অবশিষ্টাংশ থেকে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ, নন্দনকানন, চন্দনপুরা ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি গাড়ি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে বিকাল প্রায় সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন তারা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে ভবনটির মাঝামাঝি অন্তত দুটি তলার জানালা দিয়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী বের হতে দেখা যায়। শুরুর দিকে ভবনটির নিচে কাউকে দেখা যায়নি। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ছাড়া আশেপাশের লোকজনও আগুনের বিষয়টি বুঝতে পারেননি। প্রায় আধ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি ও কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় জমে।
ভবনটির কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক আজাদীকে জানান, ওয়েল্ডিংয়ের সময় বিদ্যুতের সংযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে বেশি শ্রমিক ছিল না। দুই-তিনজন শ্রমিক উপরে ছিল।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিভিয়েছেন। দুজন শ্রমিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছেন বলে শুনেছি। তবে নিশ্চিত হতে পারিনি।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, মেরিডিয়ান গ্রুপের মালিকানাধীন ২১ তলা ভবনের নয় তলায় অব্যবহৃত চট ও প্লাস্টিকের বস্তায় নির্মাণ শ্রমিকরা জ্বলন্ত সিগারেটের অবশিষ্টাংশ ফেলে যায়। পরে সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রথমে আগ্রাবাদ থেকে ৫টা গাড়ি আসার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসলে চন্দনপুরা ও নন্দনকানন থেকে ৩টা ইউনিট নিয়ে আসা হয়। ৯ তলায় দুজন শ্রমিক আটকে পড়েছিল। আমাদের একটা ইউনিট গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনে।