তাপদাহে কমেছে ট্রেনের গতি, সিডিউলে সমস্যা

ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ সব রুটে আন্তঃনগর চলছে ঘণ্টায় ৪০ কিমি গতিতে

শুকলাল দাশ | রবিবার , ৫ মে, ২০২৪ at ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

তাপদাহে রেললাইন বেঁকে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে গতি কমিয়ে চালানো হচ্ছে প্রতিটি ট্রেন। ঢাকাচট্টগ্রাম, চট্টগ্রামসিলেট, ঢাকাচট্টগ্রামকক্সবাজারসহ প্রতিটি রুটের আন্তঃনগর ট্রেন ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে চালানো হচ্ছে। আগে এসব রুটে ৮০ কিলোমিটার, ৭০ কিলোমিটার এবং সর্বনিম্ন ৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলত। এতে করে অনেক ট্রেনেরই শিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, তাপদাহের কারণে ট্রেনের গতি কমিয়ে চালানোর ফলে প্রতিটি ট্রেন ছাড়তে এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। গতকাল ঢাকাচট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ছেড়ে গেছে বিকাল ৩টায়। ঢাকাচট্টগ্রাম রুটের কিছু কিছু ট্রেনও ঠিক সময়ে ছাড়া যাচ্ছে না বা গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে না।

গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকাচট্টগ্রাম রেললাইনের আড়িখোলা স্টেশনের অদূরে (পশ্চিম দিকে) চুয়ারিয়াখোলা এলাকার কাজী বাড়িতে লাইন বেঁকে যায়। তীব্র গরমের কারণে গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন বেঁকে যায়। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ৩০ এপ্রিল টঙ্গীনরসিংদী রেল রুটের পূবাইলে রেললাইন বেঁকে গেছে। এতে এক লাইনে সারা দিন ট্রেন চলাচল করেছিল।

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে রেললাইনের তাপমাত্রা সবসময় সাত থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয়। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে কাঠের স্লিপার এলাকার রেললাইন বেঁকে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

প্রকৌশলীরা জানান, কংক্রিট স্লিপার অনেক বেশি লোড নিতে পারে। তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হলেও লাইন বেঁকে যায় না। কাঠের স্লিপারে তা সম্ভব না। কিন্তু স্লিপার স্বল্পতার করণে মেইন লাইনে কাঠের ও স্টিলের স্লিপার বসাতে হয়। পুরো রেললাইনে কংক্রিটের স্লিপার বসানো গেলে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার ঘটনা কমে আসবে। ট্রেনও গতিতে চালানো যাবে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, তাপদাহের কারণে প্রতিটি ট্রেনের গতি কমিয়ে চালানো হচ্ছে। তীব্র গরমে বিভিন্ন জায়গায় রেললাইন বেঁেক যাচ্ছে। এই কারণে প্রতিটি ট্রেন ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলানো হচ্ছে। ঢাকাচট্টগ্রাম, ঢাকাচট্টগ্রামকক্সবাজারসহ সবগুলো রুটে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলার কারণে ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে এবং ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আজকে (গতকাল) কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস এই কারণে সিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। আগামী দুইএকদিনের মধ্যে এই সমস্যা কিছুটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী, পূর্বাঞ্চলে ২,১৫১ কিলোমিটার এবং পশ্চিমাঞ্চলে ২,২৮৬ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। এই দীর্ঘ রেলপথে ঢাকাচট্টগ্রাম, চট্টগ্রামসিলেট, চট্টগ্রামকক্সবাজারসহ বেশিরভাগ রেললাইনে আছে কাঠের স্লিপার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফের বাংলাদেশে মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য
পরবর্তী নিবন্ধঝড়ো হাওয়া-শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পাকা ধান