ঢাকা–কক্সবাজার রুটে চালু হওয়া ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামের প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেনটি ১০২০ জন যাত্রী নিয়ে শনিবার সকাল ৮টায় কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে। আগের দিন শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর কমলাপুর থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে আসে ট্রেনটি।
এর আগে শুক্রবার বেলা ১২টা ৩১ মিনিটে কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশন থেকে ১০২০ জন যাত্রী নিয়ে রাজধানীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেনটি রাত ৯টা ৩৮ মিনিটের সময় কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছে। ট্রেনটি আরও ২৮ মিনিট আগে রাত ৯টা ১০ মিনিটের সময় কমলাপুরে পৌঁছানোর কথা ছিল। ট্রেনটি যাত্রাপথে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে প্রায় ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি করে। পর্যটন শহর থেকে রাজধানী ঢাকা যেতে প্রথমদিনের ট্রেনটির সময় লেগেছে প্রায় ৮ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট, আর ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় ৯ ঘণ্টা ৫ মিনিট। ঢাকা থেকে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামের ট্রেনে চড়ে জীবনে প্রথমবারের মতো শনিবার কক্সবাজার দেখতে এসেছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে অন্যতম রাজধানীর নবাবপুরের ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী, মুন্সীগঞ্জের মোহাম্মদ হাসান। আরো কয়েকটি পরিবারের সাথে তিনিও এসেছেন সপরিবারে। তার পরিবারের সকলেই প্রথম কক্সবাজার এসেছেন। তাদের সঙ্গে আসা অন্যান্য পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যও জীবনে প্রথমবার কক্সবাজার আসেন।
মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমি দেশের কয়েকটি সৈকত দেখেছি। কিন্তু কক্সবাজারের মত এত বিস্তীর্ণ সৈকত দেখিনি। পরিবারের অন্য সদস্যরাও জীবনে প্রথম কক্সবাজার দেখেছে বলে তাদের সকলের আনন্দ–উচ্ছ্বাস আলাদা।
ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাসানের মতোই গতকাল জীবনে প্রথম কক্সবাজার বঙ্গোপসাগর দেখেছেন টঙ্গীর শ্রমিক আবদুল্লাহ। একদল বন্ধু ও সহকর্মী মিলে বেড়াতে এসেছেন কক্সবাজারে। ২ দিন পর সোমবার আবারও চলে যাবেন ট্রেনযোগে।
তবে ট্রেনে প্রথম কক্সবাজারে এসে বিড়ম্বনায় পড়ার কথা জানান রাজধানীর মীরপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম রাফি। তিনি বলেন, আগেও বেশ কয়েকবার কক্সবাজারে এসেছি। তবে ট্রেনে চড়ে প্রথম সপরিবারে কক্সবাজারে আসলাম। কিন্তু স্টেশনে বেশ ভোগান্তি। স্টেশন থেকে সিএনজি অথবা টমটমে শহরের ৫/৬ কিলোমিটার রাস্তার ভাড়া নেয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৫০ টাকা, আর রিজার্ভ ৩শ টাকা। অথচ বাসে আসলে সরাসরি হোটেলেই ওঠা যায়।
গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার রেল লাইনের উদ্বোধন করেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইন ও কাউন্টারে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলে টিকিট বিক্রি শুরুর মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই সকল টিকেট শেষ হয়ে যায়।
‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনটিতে শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৩২৫ টাকা। স্নিগ্ধা (এসি সিট) শ্রেণিতে ১ হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া ২ হাজার ৩৮০ টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিট ৪৬৬ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা। ট্রেনটি ঢাকা থেকে সোমবার এবং কক্সবাজার থেকে মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে।