ঢাকার জমি, ফ্ল্যাট মালিক সবারই আছে কালো টাকা : অর্থমন্ত্রী

| বৃহস্পতিবার , ১৬ জুন, ২০২২ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

কালো টাকা সৃষ্টির পেছনে পদ্ধতিগত সমস্যার উদাহরণ দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ঢাকায় যাদের জায়গা-জমি, বাড়িঘর ও ফ্ল্যাট আছে, সবাই কালো টাকার মালিক; একজনও বাকি নাই। মূলতঃ কালো টাকা শব্দটির পরিবর্তে ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ শব্দযুগল ব্যবহার করে এ বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে তিনি।
গতকাল বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অথনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উঠে আসে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা এবং কালো টাকা সাদা করার প্রসঙ্গটি। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নিয়ে চাপে আছেন কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি চাপে নাই, কোনোভাবেই চাপে নাই। যেটা বলেছি সেটা অবশ্যই করব। আমার সম্পর্কে আপনারা জানেন। খবর বিডিনিউজের।
সরকারি বিভিন্ন পদ্ধতিগত সমস্যার কারণে মানুষের টাকা কালো টাকায় বা অপ্রদর্শিত অর্থে পরিণত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকায় যাদেরই জায়গা-জমি আছে, বাড়িঘর আছে, ফ্ল্যাট আছে, সবাই কালো টাকার মালিক। একজনও বাকি নাই। কারণ, এরজন্য সরকার দায়ী, এরজন্য সিস্টেম দায়ী। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, গুলশান এলাকায় আপনি আজকে যে জমি কিনবেন, আজকে যে দামে রেজিস্ট্রি করবেন, তারচেয়ে অনেক বেশি দাম রয়েছে ওই জমিটির। কিন্তু বেশি দাম দিয়ে আপনি কিনতে পারবেন না। প্রত্যেকটা মৌজার দাম ঠিক করে দেওয়া আাছে। এর বেশি দামে পারা যায় না। সুতরাং যেটা পারা যাবে না, তাহলে কালো টাকা তো এখানেই হয়ে আছে। কে কালো টাকার বাইরে আছে? আপনি আমাকে বলেন। কালো টাকা যখন আমরা দেশে নিয়ে আসার চেষ্টা করি তখন বলা হয়।
অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ে লাজ লজ্জার কিছু নাই মন্তব্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, সরকারের দায় এর জন্য। আমিও একসময় দায়িত্বে ছিলাম। চেষ্টা করেছি দাম বাড়াতে, কিন্তু পারি নাই। যে দাম ছিল সে দামই আছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে ফ্ল্যাট দুই কোটি টাকায় রেজিস্ট্রি হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটের দাম ১০ কোটি টাকা। স্ট্যাম্প ডিউটি, রেজিস্ট্রেশন ফিও সরকার পাচ্ছে না। মাঝখানে টাকা খাতাপত্রে দেখা যাচ্ছে না।
বাজেট পুঁজিবাজারের জন্য তেমন কিছু রাখা হয়নি এবং বাজেট ঘোষণার পর থেকে দরপতন হচ্ছে- এমন বক্তব্যও নাকচ করেন তিনি। তিনি বলেন, যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন ও কার্যকর হবে জুলাইতে। পুরো বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য অনেক কিছু আছে।
পুঁজিবাজারের জন্য সরাসরি সরকারের পক্ষ থেকে কী করা যেতে পারে- পাল্টা প্রশ্ন রেখে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি ভালোভাবে চলছে, প্রবৃদ্ধি ভালো, সামষ্টিক অর্থনীতির সূচক প্রতিটি ইতিবাচক। পুঁজিবাজারের ওঠানামা স্বাভাবিক নিয়ম। একদিন উঠবে, একদিন পড়বে এটা স্বাভাবিক নিয়ম। তিনি বলেন, পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার চেষ্টা করছি। সেটাও যখন আসবে, একটা অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাকিবের নেতৃত্বে নতুন শুরুর প্রত্যাশা
পরবর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও প্রভাব নেই পাইকারিতে