টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইট ওয়াশ বাংলার নারীরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ৫ এপ্রিল, ২০২৪ at ৭:০১ পূর্বাহ্ণ

অস্ট্রেলিয়া নারী দলের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারল না বাংলাদেশ নারী দল। ওয়ানডে সিরিজের মত টিটোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইট ওয়াশ হলো টাইগার নারীরা। হতাশাময় সিরিজের শেষটিতে এসেও ভালো কিছু উপহার দিতে পারেনি বাংলাদেশ। ৭৭ রানের জয়ে সিরিজ শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া। নিগার সুলতানার দল তিন ওয়ানডে তিন টিটোয়েন্টির সবকটিতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেনি কোনো ম্যাচে। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ টিটোয়েন্টিতে ২০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে ১৫৫ রান। বাংলাদেশের জন্য ওই রান এমনিতেই ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। রান তাড়ায় কোনো লড়াইয়ের ছাপই রাখতে পারেনি ব্যাটাররা। ধুঁকতে ধুঁকতে তারা যেতে পারে ৭৮ রান পর্যন্ত।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বলে বেথ মুনির বাউন্ডারিতে শুরু করে যাত্রা। পরের ওভারে শরিফা খাতুনের বলে চার মারেন আরেক ওপেনার হিলি। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা ফারিহা তৃষ্ণাকে এবার প্রথম বলের ছক্কায় স্বাগত জানান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শরিফা। ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পড হন ১৩ বলে ১০ রান করা মুনি। হিলি ছিলেন আপন রূপেই। তৃষ্ণার পরের ওভারে বাউন্ডারির পর ডিপ মিড উইকেট দিয়ে মারেন বড় ছক্কা। অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে হিলির আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সামনে পড়েন নাহিদা আক্তার। পরপর দুই বলে বাউন্ডারি হজম করেন বাঁহাতি স্পিনার। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে জিতেন নাহিদাই। পয়েন্টে ক্যাচ দেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। ৬ চারের সঙ্গে ২ ছক্কায় ২৯ বলে ৪৫ রান করেন তিনি। নিজের পরের ওভারের শেষ বলে এলিস পেরিকেও ফেরান নাহিদা। চতুর্দশ ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে অ্যাশলি গার্ডনারকে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান ২৩ বছর বয়সী স্পিনার। সেটি অবশ্য করতে পারেননি। শেষটায় আবার বদলে যায় দৃশ্যপট। তাহলিয়া ম্যাকগ্রাও গ্রেস হ্যারিসের ঝড়ে শেষ চার ওভারে ৫৫ রান করে সফরকারীরা। ৩৩ বলে ৫৭ রানের জুটি গড়েন তারা। অষ্টাদশ ওভারে শরিফার বলে দুই ছক্কা ওড়ান ম্যাকগ্রা। পরের ওভারে নাহিদার বলে হ্যারিসের ব্যাট থেকে আসে দুটি চার। শেষ ওভারে তৃষ্ণাকে ছক্কা মারেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হওয়া হ্যারিস ১১ বলে করেন ১৯ রান। ২৯ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাকগ্রা।

রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই মুর্শিদা খাতুনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তিন নম্বরে নামানো হয় রিতু মনিকে। ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও ১০ রান করে ফিরের রিতুমনি। চার নম্বরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি স্বর্ণা আক্তারও। এলিস পেরির অনেক বাইরের বল তাড়া করে তিনি ধরা পড়েন গালিতে। তখনও একপ্রান্তে অবিচল আরেক ওপেনার দিলারা আক্তার। তবে বেশি কিছু করতে পারেননি তিনি। ১৮ বলে ১২ রান করে ফিরেন । দল ৩৬ রানে ৫ উইকট হারানোর পর ক্রিজে যান নিগার। ২০১৫ সালে অভিষেক ম্যাচের পর এবারই প্রথম এত নিচে নামলেন তিনি। এরপর এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে ফাহিমা, শরিফা, নাহিদা, মারুফার আসাযাওয়া দেখেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫৯ রানে নবম উইকেট পতনের পর শেষ উইকেটে তৃষ্ণাকে নিয়ে ২৫ রানের জুটিতে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমান তিনি। ৩১ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩২ রান করে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন নিগার। প্লেয়ার অব দ্যা ম্যাচ হয়েছেন টায়লা ভ্যালেমিক। আর প্লেয়ার অব দ্যা সিরিজ হয়েছেন সোফি মলিনিউ। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের হতাশা পেছনে ফেলে দ্রুত সামনে তাকানোর চ্যালেঞ্জ এখন নিগারদের সামনে। পাঁচ ম্যাচের টিটোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আগামী ২৩ এপ্রিল বাংলাদেশে আসছে ভারত। মাঠের লড়াই শুরু ২৮ এপ্রিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবার ভারত সিরিজের দিকে তাকিয়ে নারী দল
পরবর্তী নিবন্ধষষ্ঠ রাউন্ড শেষে শীর্ষে আবাহনী, দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা