ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যেতে হয় তবেই আসে সাফল্য

তাপস বড়ুয়ার বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আজাদী সম্পাদক

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, প্রত্যেকের জীবনে ঝুঁকি থাকে। ঝুঁকি থাকে প্রত্যেক কাজেও। তারপরও সাহস করে এগিয়ে যেতে হয়। যেকোনো জায়গা থেকে প্রথম পদক্ষেপটা নিতে হয়। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, আসে সাফল্য। তাপস বড়ুয়াও সাহস করে বাইরে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বলেই আজ সে এই অবস্থানে। জাপান সফর নিয়ে তাপস বড়ুয়ার ভ্রমণ কাহিনী ‘পাতা ঝরার উৎসবে’ বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এম এ মালেক এসব কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এই প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়।

বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বইয়ের লেখক তাপস বড়ুয়া, তার সহধর্মিণী তনুশ্রী বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি, . সংঘপ্রিয় মহাথেরো, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদী সম্পাদক আরো বলেন, একজন সফল ব্যক্তির পেছনে সবসময় একজন নারী থাকেন। তাপস বড়ুয়ার ক্ষেত্রেও তার স্ত্রী তনুশ্রীর ভূমিকা রয়েছে। অনুপ্রেরণা রয়েছে। মানুষ বলে সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। আমি বলিসংসার সুখের হয় দুজনের গুণে। একজন আরেকজনকে মানিয়ে চলতে হয়, তবেই সংসার সুখের হয়। তারা দুজন একে অপরকে মানিয়ে চলতে পারছে বলেই আজ সফল বলা যায়। তাপস ২০ বছর আগে জাপান সফরে গিয়ে এই বই লিখেছিল। এখন ১৯ বছর ধরে আমেরিকায় থাকছে। আমেরিকাতে যা দেখছে, তা নিয়েও সে লিখবে বলে আমি আশা রাখি।

সভাপতির বক্তব্যে কবিসাংবাদিক রাশেদ রউফ বলেন, তাপসের অনেকগুলো ভালো দিক আছে। তিনি কথা কম বলেন, কাজ করেন বেশি। সৃজনশীল একজন মানুষ। ১৯ বছর ধরে বাইরে থাকলেও মাঝে মাঝে কিন্তু আজাদীতে লিখেন। আলোকচিত্রী সাংবাদিক হিসেবে তাপস বড়ুয়ার পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা ঈর্ষণীয় ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী বলেন, তখন একটি মোটর সাইকেলে করে পুরো চট্টগ্রাম শহর এবং শহরের বাইরেও দাপিয়ে বেড়াতেন তাপস বড়ুয়া। তিনি একজন তারকা সাংবাদিক। এখনো তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। আজাদী ও তাপস বড়ুয়া যেন অবিচ্ছেদ্য অংশ।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বোস্টন প্রবাসী তাপস বড়ুয়া বলেন, আমি ছিলাম আলোকচিত্রী সাংবাদিক। কিন্তু আমার যে দুকলম লেখাএর অনুপ্রেরণা দৈনিক আজাদী। আজাদীতে থাকাকালীন আমি জাপানে যাওয়ার সুযোগ পাই। সেখানে গিয়ে যা দেখি, আমার ভালো লাগে। বিস্ময় জাগে। আমি ছবি তুলি। পরে খণ্ড খণ্ড করে তা আজাদীতে লিখি। গাছের পাতা লাল হয়ে ঝরে। জাপানিরা তাকে ‘ঐশিকি’ বলে। বাংলায় পাতা ঝরার উৎসব। আমেরিকা গিয়ে প্রথম দিকে জীবনযুদ্ধে নামতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার কারণে ওই লেখালেখি থেকে বলতে গেলে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে পড়ি। জাপান ভ্রমণ নিয়ে লেখা এই বই আমার সৃষ্টি। আনন্দের বিষয়। সৃজনশীল কাজ আমাকে খুব টানে। হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে এই প্রকাশনা উৎসব। এটি আমেরিকা যাওয়ার পর আমাকে নিশ্চয় আনন্দ দেবে, তৃপ্তি দেবে। এসব কাজে সবসময় অনুপ্রেরণা দেয়ায় স্ত্রী তনুশ্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান দৈনিক আজাদীর এক সময়ের আলোকচিত্র সাংবাদিক তাপস বড়ুয়া।

তাপস বড়ুয়ার সহধর্মীনি তনুশ্রী বড়ুয়া বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য তার ভালো লাগার জিনিসগুলো ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাপস বড়ুয়ার ভালো লাগার বিষয়গুলো ধরে রাখার চেষ্টা। এই শহর তাকে (তাপসকে) যেন একটা গতি দেয়। আমরা আমেরিকা গেলেও আমাদের শিকড় কিন্তু এখানেই, আজাদীতেই। এই যে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণের প্রকাশনা উৎসব হচ্ছে, আমেরিকা গিয়েও তার অনেক ভালো লাগবে। অনুষ্ঠানে আগত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবার ভালোবাসা আমাদের আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।

শৈল বড়ুয়া সুজনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মাঝে সাংবাদিক আজাদ তালুকদার, গল্পকার ও অনুবাদক ফারজানা রহমান শিমু, কবি দীপক বড়ুয়া, কল্লোল বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনাগরিক ভূমি সেবায় নিয়োগ হচ্ছে জেলাভিত্তিক এজেন্ট : ভূমিমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৮ মাসে ৩৯ হাজার ২২০ কোটি ১৭ লাখ টাকা আদায়