জয়পাহাড়েই হচ্ছে বিপিসির প্রধান কার্যালয়

মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, কনসালটেন্ট নিয়োগ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৩০ নভেম্বর, ২০২০ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ৫০ বছর পর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) প্রধান কার্যালয় নির্মাণের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা তৈরির জন্য স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ‘ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ’কে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিপিসি। তবে এখনো পর্যন্ত কনসালটেন্টের সম্মানি নির্ধারণ করা হয়নি। তাছাড়া প্রধান কার্যালয়ের পরিধি কেমন হবে, সে বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা যায়, ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত পেট্রোবাংলার একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল বিপিসি। ১৯৭৭ সালের ১ জানুয়ারি পৃথক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিপিসি গঠিত হয়। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান কার্যালয় এবং প্রধান ডিপো চট্টগ্রামে হওয়ায় এবং সরকারের বিকেন্দ্রীকরণ নীতির কারণে ১৯৮৯ সালে বিপিসির প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হয়। শুরুতে নগরীর আগ্রাবাদের হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশনের বিল্ডিংয়ে প্রধান কার্যালয়ের কার্যক্রম চালিয়েছিল বিপিসি। পরবর্তীতে সল্টগোলা বন্দর ভবনের বিপরীতে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলা ও চতুর্থ তলার একাংশ ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে বিপিসি।
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে জামাল খান সংলগ্ন জয়পাহাড়ে প্রধান কার্যালয় নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বিপিসি। বিপিসির চাহিদা মোতাবেক বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দও দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। গত ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয়। ওই প্রকল্পে জয়পাহাড়ে ২০তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রকল্পে ২০১৯ সালে কনসালটেন্ট নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিপিসি। ধারাবাহিক অংশ হিসেবে ওই বছরের ২৯মে চার প্রতিষ্ঠানকে কনসেপচ্যুয়াল ডিজাইন জমা দেওয়ার জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। ওই বছরের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে দুটি প্রতিষ্ঠান কনসেপচ্যুয়াল ডিজাইনও জমা দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রস্তাবনা দুটি মূল্যায়ন পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের বাধার মুখে শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয় নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিপিসি। এরপর মন্ত্রণালয়ের সুপারিশেই জয়পাহাড়কে সমন্বিতভাবে একটি মাস্টার প্লানের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়। পরে জয়পাহাড়কে ঘিরে সমন্বিত স্থাপনা নির্মাণের সুন্দর ডিজাইন উপস্থাপনের জন্য ৫ লক্ষ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করে বিপিসি। এরপর দেশসেরা নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রকল্পের ধারণাগত প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। স্থপতি ইকবাল হাবিব স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ভিত্তির প্রধান।
এ ব্যাপারে বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) সৈয়দ মেহদী হাসান দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘জয়পাহাড়ে প্রধান কার্যালয় নির্মাণের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ভিত্তির উপস্থাপিত ডিজাইনও গৃহীত হয়েছে। ডিজাইন উপস্থাপনের জন্য তাদের ৫ লক্ষ টাকা সম্মানি দেওয়া হয়েছে। এখন ভিত্তিকে প্রকল্পের কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কনসালটেন্সি ফি নির্ধারিত হয়নি। এখন আমরা প্রধান কার্যালয়ের জন্য আমাদের চাহিদার বিষয়টি কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেবো। আগামী ৫০ বছরকে সামনে রেখে জনবলের জন্য প্রয়োজনীয় অফিস বানানোর প্রস্তাবনা তৈরি করা হবে। প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র অফিস ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
বিপিসি সূত্র জানিয়েছে, জয় পাহাড়ে বিপিসির মালিকানাধীন ৩০ একর জায়গা রয়েছে। পুরো এলাকাটিকেই নান্দনিকরূপে সাজানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাস্টারপ্লান তৈরি করা হয়েছে। ভিত্তি স্থপতি বৃন্দ’র উপস্থাপিত ডিজাইনটি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অনুমোদন করেছে। ওই ডিজাইনে প্রধান কার্যালয়ের ভবন বাদেও স্টাফ কোয়ার্টার, খেলার মাঠ, ঝুলন্ত সেতু, টেরাকোটাসহ দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা থাকবে। পুরো পরিকল্পনাটা হবে পাহাড় ও বনের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকারিগরী শিক্ষায় জোর শিক্ষা উপমন্ত্রীর
পরবর্তী নিবন্ধদুদকে এলেন না এসিল্যান্ড, নির্দোষ দাবি করে চিঠি