এক দশক পর ঢাকায় প্রকাশ্য সমাবেশ করে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলো ‘আসলে বিএনপির বক্তব্য’ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সচিবালয়ে গতকাল এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, জামায়াতের সমাবেশ থেকে যেভাবে আস্ফালন করা হয়েছে এগুলো আসলে জামায়াতের বক্তব্য নয়, এগুলো আসলে বিএনপির বক্তব্য। তারা নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলেছে। অর্থাৎ ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে শত শত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, সেটারই ইঙ্গিত তারা গতকাল দিয়েছে। খবর বিডিনিউজের। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার
দাবিতে শনিবার রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম রাজধানীতে নির্বিঘ্নে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো দলটি।
শনিবার জামায়াত নেতাদের বক্তব্যে বিএনপির কথাই উঠে এসেছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান শরিক হচ্ছে জামায়াত। জামায়াতকে দিয়ে তারা এ কথাগুলো বলিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ আর ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের পুনরাবৃত্তি কাউকে করতে দেবে না। তাদেরকে সুযোগ দিলে যে তারা কী করতে পারে সেটি গতকাল (শনিবার) তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে। এটি স্পষ্ট করাও প্রয়োজন ছিল। জামায়াত এখনও যেহেতু নিষিদ্ধ হয় নাই, রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা আবেদন করেছে, সেজন্য তাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে কালকে জামায়াতের যে বক্তব্য, এটি আসলে বিএনপিরই বক্তব্য।
সচিবালয়ে গতকাল ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু জুলিও কুরি ও এশীয় শান্তি সম্মেলন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ‘জামায়াত ও বিএনপির যোগসূত্র’ নিয়ে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। জামায়াতের সমাবেশ নিয়ে শনিবার আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বিএপিকেই ‘দোষারোপ’ করেন।
অনিবন্ধিত দল জামায়াতকে আরও সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, সংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, যে কোনো রাজনৈতিক দল তো সমাবেশ করতে পারে। কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হলে তার সভা–সমাবেশ করার অধিকার থাকে না। কিন্তু যে কোনো রাজনৈতিক দল যতক্ষণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ নয় তারা তো সভা–সমাবেশ করার অধিকার রাখে। সামনে নির্বাচন, আমরা চাই সমস্ত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। নির্বাচন মানেই তো নির্বাচনের দিন শুধু নির্বাচন নয়, নির্বাচনের প্রক্রিয়া তো শুরু হয় অনেক আগ থেকেই। নির্বাচনের বাকি মাত্র ছয় মাস। এই সময়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল সভা, সমাবেশ, মিটিং করবে একটি নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করবে এটিই স্বাভাবিক। সেই কারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা–সমাবেশ করছে।
তবে স্বাভাবিক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি বিএনপি–জামায়াতের ‘উদ্দেশ্য নয়’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা অতীত যদি পর্যালোচনা করি এবং তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য যদি আমরা ব্যাখ্যা করি, তাহলে দেখতে পাই তারা অতীতের পুনরাবৃত্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে, কিন্তু দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।