চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার অনলাইন আবেদন শুরু হচ্ছে কাল ৩০ মার্চ থেকে। আবেদন শেষ হবে ১২ এপ্রিল। ১৪ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন ফি জমা দেয়া যাবে। ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ১৬–২৫ মে। চূড়ান্ত তারিখ জানা যাবে রোল নির্ধারণের পর। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় সেকেন্ড টাইমাররা অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। তবে তাদের মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কেটে নেওয়া হবে। এছাড়া আবেদন যোগ্যতায় এ ইউনিটে প্রার্থীদের জন্য ০.২৫ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া এবার প্রতি ইউনিটে আবেদন ফি নির্ধারিত হয়েছে ৯৫০ টাকা। যা গতবছর ছিল ৮৫০ টাকা। গতকাল মঙ্গলবার ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমিক) এস এম আকবর হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. রাশেদ মোস্তফা বলেন, ডিনস কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে। অর্থাৎ যারা ২২ ও ২৩ সালে এইচএসসি দিয়েছে তারা উভয়ই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। তবে ২২ সালে পাসকৃতদের মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কাটা হবে। তিনি বলেন, গত বছরের মতো এবারও চারটি ইউনিট ও দুটি উপ–ইউনিটে পরীক্ষা হবে। গত বছরের চেয়ে এবার খুব একটা পরিবর্তন হবে না। তবে বিজ্ঞান অনুষদে আবেদনের যোগ্যতায় সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। ‘এ’ ইউনিটে আগে আবেদনের জন্য এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে মোট জিপিএ ৮.০০ লাগত। এখন তাতে ০.২৫ যোগ করে ৮.২৫ করা হয়েছে।
পরীক্ষা পদ্ধতি : ভর্তি পরীক্ষা বরাবরের মতোই ১২০ নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১০০ নম্বর লিখিত পরীক্ষা (এমসিকিউ) ও বাকি ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসি জিপিএ থেকে যুক্ত হবে। বহুনির্বাচনী পদ্ধতির এই ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০।
পরীক্ষার সময়সূচি : সম্ভাব্য তারিখ ১৬ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত চারটি ইউনিট ও দুই উপ–ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আসন সংখ্যা : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটের বিপরীতে ৪ হাজার ৯২৬টি আসন রয়েছে। সে হিসেবে এ ইউনিটে আসন আছে ১ হাজার ২১৪টি, বি ইউনিটে ১ হাজার ২২১টি, সি ইউনিটে ৪৪২টি ও ডি ইউনিটে ১ হাজার ১৫৭টি। এছাড়া দুইটি উপ ইউনিটের মধ্যে বি১ ইউনিটে আসন রয়েছে ১২৫টি ও ডি১ ইউনিটে ৩০টি আসন রয়েছে।
আবেদন যোগ্যতা : ভর্তি পরীক্ষায় যারা ২০১৯ সালে মাধ্যমিক, ২০২১ ও ২০২২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে তারাই ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবে। পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতায় বিজ্ঞান থেকে আগে ছিল ৮.০০ পয়েন্ট, সেটাকে বাড়িয়ে ৮.২৫ করা হয়েছে। বাকি বিভাগগুলোর ক্ষেত্রে গতবছরের মতো ইউনিটভিত্তিক আবেদন যোগ্যতা একইরকম থাকছে।
এ ইউনিট : এ ইউনিটের অধীনে রয়েছে চারটি অনুষদ। এগুলো হলো বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদ। আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ ৮.২৫। প্রতিটিতে আলাদাভাবে জিপিএ ৪.০০ থাকতে হবে।
বি ইউনিট : কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত বি ইউনিটে উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ সব গ্রুপের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। মানবিক বিভাগ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ ৭.৫০। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম জিপিএ লাগবে ৮.০০। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের জন্যও লাগবে জিপিএ ৮.০০। প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে। এই ইউনিটে বিভাগ রয়েছে মোট ১৩টি। বি ইউনিটে (নাট্যকলা, চারুকলা ও সংগীত বিভাগ ব্যতীত) মোট সাধারণ আসন ১ হাজার ২২১টি। চারুকলা ও নাট্যকলা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে বি–১ উপ–ইউনিটে আবেদন করতে হবে। আবদেন যোগ্যতা বি ইউনিটের মত। এই উপ–ইউনিটে মোট সাধারণ আসন ১২৫টি।
সি ইউনিট : এই ইউনিটে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ ৮.০০। উভয় পরীক্ষায় পৃথকভাবে অবশ্যই ৩.৫০ পেতে হবে।
ডি ইউনিট : সব গ্রুপের শিক্ষার্থীরাই ডি ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবে। এখানে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের নয়টি বিভাগ, আইন অনুষদের অধীনে থাকা আইন বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসনের অনুষদের সব বিভাগ রয়েছে। এছাড়া আছে জীববিজ্ঞান অনুষদের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগ। ডি ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ ৭.৫০ থাকতে হবে। প্রতিটিতে আলাদাভাবে ন্যূনতম জিপিএ–৩.৫০ পেতে হবে। এছাড়া শিক্ষা অনুষদভুক্ত (ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স) ডি–১ উপ–ইউনিটে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে আবেদন করতে হবে। এতে মোট ৬.০০ জিপিএ লাগবে। ন্যূনতম ২.৫০ পয়েন্ট লাগবে।