নৌবাহিনীর চারটি জাহাজে করে গতকাল প্রায় দেড় হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছেছে। একদিনের ব্যবধানে চতুর্থ দফায় রোহিঙ্গাদের পাঠানো হয়। গতকাল শনিবার সকালে বোট ক্লাব থেকে ১ হাজার ৪৬৬ জন রোহিঙ্গা নিয়ে চারটি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গতকাল চারটি জাহাজে করে পাঠানো রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয় শুক্রবার। পরে সেখানে তাদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষে বাসযোগে নগরীর বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আসা হয়।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের পদস্থ একজন কর্মকর্তা জানান, বোট ক্লাব জেটি থেকে ১ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে নৌ-বাহিনীর ৪টি জাহাজ ভাসানচরে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে দুজন রোহিঙ্গার আগের দিনের দলের সাথে যাওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থ বোধ করায় তাদের পাঠানো হয়নি। গতকাল তাদেরকেও জাহাজে করে পাঠানো হয়। শেষ খবরে চতুর্থ দলটিকে ভাসানচরের আশ্রয়ণ এলাকায় ঘর দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৮০৪ জন, গত শুক্রবার তৃতীয় দফায় ১ হাজার ৭৭৮ জন এবং গতকাল ১ হাজার ৪৪৬ জনকে চতুর্থ দলে ভাসানচর পাঠানো হলো। ভাসানচরে স্থানান্তরিত হওয়া রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ইতিবাচক খবর শুনে টেকনাফ-উখিয়ার শরণার্থী শিবিরগুলোর হাজার হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এতে করে শুরুতে রোহিঙ্গাদের ভাসানচর পাঠানোর ব্যাপারে প্রশাসনকে বেগ পেতে হলেও এখন বিরাজ করছে উল্টো চিত্র। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগেও কয়েক দফা নির্যাতনের শিকার হয়ে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় এগার লাখ। এদের মধ্যে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আশ্রয় দেয়ার জন্য ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।