কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়িজোন দখলে নিতে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল বুধবার ভোররাতে বিশাল একটি চিংড়িঘের দখলে নিতে গিয়ে গুলি বর্ষণ করে তারা। এ সময় বাধা দিতে গেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির এক সদস্য। তার নাম মোহাম্মদ হোসেন (৫৬)। তিনি মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার আবুল খায়েরের পুত্র।
রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির পরিচালক শহীদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে জানান, সমিতির মালিকানাধীন চিংড়িজোনের সাহারবিলের রামপুর মৌজায় ৫১১২ একরের বিশাল চিংড়িঘের রয়েছে। তন্মধ্যে বিশাল এলাকায় সমিতির নিয়ন্ত্রণও নেই। নিয়ন্ত্রণে থাকা চিংড়িঘের দখল করে নিতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে চিংড়ি জোনের একাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রায় অর্ধ শতাধিক সদস্য মহড়া দিতে থাকে। এ সময় তারা সমিতির সদস্যদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাদের কথা মতো বাড়িঘর ছেড়ে চলে না যাওয়ায় আজ (বুধবার) ভোররাতে সমিতির সদস্য মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
নিহত মোহাম্মদ হোসেনের স্ত্রী রশিদা বেগম জানান, সমিতির অধিভুক্ত সদস্য হিসেবে তার স্বামী মোহাম্মদ হোসেন ৭ বছর ধরে সপরিবারে চিংড়িঘেরের পাশেই ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। একইভাবে শত শত সদস্য সপরিবারে এখানে বসবাস করেন। এতদিন ধরে তারা নিরাপদে বসবাস করলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাদের ছোড়া গুলিতে পুরো এলাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা মঙ্গলবার গভীর রাতে আমাদের ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলে। আমরা তাদের কথায় অস্বীকৃতি জানাই। আজ (বুধবার) ভোররাতে সন্ত্রাসীরা চিংড়িঘের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলে আমার স্বামী বাধা দেন। এ সময় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. রকীব উর–রাজা বলেন, আপাতত একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমি এবং থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে চিংড়িজোন রামপুরে গিয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।