রাঙ্গুনিয়ার চাঞ্চল্যকর প্রবাসী ইউসুফ আলী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়ার আদালত ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন। এর মাধ্যমে ঘটনার প্রায় দীর্ঘ দেড় বছর পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এই ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী এস ইউ এম নুরুল ইসলাম জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরে এই ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার জেলা জজ আদালত মামলাটি আমলে নেয় এবং অভিযোগ গঠনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করে। এর মাধ্যমে মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অত্যন্ত নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার প্রত্যাশা করেন তিনি।
জানা যায়, নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এই ১৩ আসামিরা হলেন আজগর আলী (৫২), টিপু (২৮), মামুন (৩৩), আলী আকবর (৪৩), মাহবুবুল আলম (৩৩), সাগর খান (২২), মোমিন (২০), আলমগীর (৪০), আয়ুব আলী খান (৫৪), মোহসিনুল হক (৫৫), আবু তালেব (৩৮), আবু বক্কর (৫১) ও নেজাম উদ্দিন নাজু (১৭)। তাদের মধ্যে প্রধান আসামিসহ দুই জন জেলে, পাঁচজন জামিনে এবং বাকিরা পলাতক রয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে এম আবু তৈয়ব তালুকদার দ্বিতীয়বারের মতো সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আজগর আলী এতে ক্ষিপ্ত হন। তার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ দল প্রথমে ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর হৃদয় নামের এক সমর্থক এবং পরদিন ইউপি সদস্য তৈয়ব তালুকদারের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। এরপর ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট থেকে রাজানগরের বগাবিলী গ্রামে যাওয়ার পথে তৈয়বের বড় ভাই প্রবাসী ইউসুফের ওপর হামলা চালানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ইউসুফ আলীর স্ত্রী শাহিনুর আক্তার বাদী হয়ে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আজগর আলীসহ ১২ জনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
বাদী শাহিনুর আক্তার বলেন, স্বামীকে হারিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এর ওপর হত্যাকারীরা মামলা তুলে নিতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমনকি আমার সন্তান ও দেবরকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে তারা। তাদের অব্যাহত হুমকির কারণে স্বামীর ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকতে হচ্ছে।
নিহত ইউসুফের ছোট ভাই ও ইউপি সদস্য এম আবু তৈয়ব তালুকদার বলেন, হত্যাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ রয়েছে। এখন তাদের অব্যাহত হুমকির কারণে ভয়ে আছি। এ বিষয়ে থানায় জিডিও করেছি। আমার নিরীহ ভাইয়ের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।