আমরা গ্রামে বড় হয়েছি। গ্রামের স্কুলে পড়ালেখা করে মাধ্যমিক পাঠ চুকিয়েছি। পাক আমলে এদেশের শতকরা ৯০ জন মানুষের বসবাস ছিল গ্রামে। স্বনামধন্য কবি–সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ সকলেই গ্রামের মাটির কাদা–ধূলি গায়ে মেখেই স্ব স্ব স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। টুঙ্গীপাড়া গাঁয়ের ছেলে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে হয়তো বাংলাদেশের মানুষ আজীবন পরাধীনতার গ্লানি বয়ে বেড়াত।
গ্রাম হচ্ছে আমাদের শেকড়, আমাদের অস্তিত্ব। শেকড়–অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যাবে না। যে যেখানেই থাকি না কেন শেষ ঠিকানা গ্রামের মাটি। এ মাটিতেই চির নিদ্রায় শায়িত হতে হবে। তাই, গ্রাম ও গ্রামের মানুষকে ভালোবাসতে হবে। তাঁদের সুখ–দুঃখ, হাসি–কান্নায় নিজেকেও সম্পৃক্ত রাখতে হবে। সামাজিক–সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশ নিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করতে হবে। দুঃখ হয়, এক শ্রেণীর গাঁও–গেরামের মানুষ শহুরে জীবনে এমন অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে যে, শেকড়–অস্তিত্বকে ভুলে যেতে বসেছে। কালে–ভদ্রেও গ্রামের মাটিতে পা বাড়ায় না। তারা পড়ালেখা ও জ্ঞানার্জন করে এতই স্মার্ট হয়ে গেছে, শেকড় আঁকড়ে ধরা মানুষ গুলোকে পরিচয় পর্যন্ত দিতে চায় না। ফলে, তাঁরা জীবনে যতই বড় হোন, নিজ গ্রামবাসীর নিকট হয়ে যায় অজানা, অচেনা লোক।