গবেষণা হতে হবে বাস্তবসম্মত ও জনসম্পৃক্ত : রিজওয়ানা

চবিতে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো উদ্ভাবন মেলা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ১০:৫৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গবেষণা ও উদ্ভাবন মেলা। চট্টগ্রামের সকল গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণাকর্ম ও উদ্ভাবনকে এক প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে এটি দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটে বর্তমানে গবেষণার জন্য কতটুকু বরাদ্দ রাখা হয় আর কতটুকু বরাদ্দ রাখা উচিত, সে ব্যাপারে গবেষকদের আওয়াজ তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের গবেষণা যেন কেবল একাডেমিক চর্চায় সীমাবদ্ধ না থেকে বরং তা বাস্তবসম্মত ও জনসম্পৃক্ত হয়। গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে যদি পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণ করা যায় তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

মেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি অনুষদের ৪৭টি বিভাগ, ৩৪টি ল্যাবরেটরি এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫টি গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্টলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের মধ্যে কিভাবে বিদ্যমান রিসোর্সের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় সে ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়। গবেষণা মেলায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘ক্ষুদে গবেষক’ পর্বে অংশগ্রহণ করে চট্টগ্রামের স্কুলসমূহ। ফ্রোবেল একাডেমি, ফুলকি এবং লিডার’স স্কুল ও কলেজের ক্ষুদে গবেষকদল তাদের গবেষণাকর্ম উপস্থাপনা করে। গবেষণা মেলা উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলআমিন, এ এফ মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি এম নুরুল আলম এবং জামাল নজরুল গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য সাদাফ সাজ সিদ্দিকী। চবি জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ও সিইউআরএইচএস এর মডারেটর ড. আদনান মান্নান। এ মেলার সার্বিক সহযোগিতায় ছিল চিটাগাং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ এন্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটি (সিইউআরএইচএস)

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের গবেষণায় আরো গুরুত্ব দেয়া উচিত। বই মেলা যদি মাসব্যাপী হতে পারে, তাহলে গবেষণা মেলা কেন শুধু একদিন হবে?

মঞ্চে হাইলাইটেড রিসার্চ টক শিরোনামে চবির শিক্ষকগণ তাদের উদ্ভাবন ও গবেষণার গল্প উপস্থিত শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের সামনে তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক ড. এস এম আবে কাউসার, অধ্যাপক ড. আমীর মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ, অধ্যাপক ড. লুলু ওয়াল মারজান, অধ্যাপক ড. সাবিনা নার্গিস লিপি, অধ্যাপক ড. এস এম সোহরাব উদ্দিন। ‘প্রাতিষ্ঠানিক আলোচনা : সম্ভাবনাময় গবেষণা’ শীর্ষক সেশনে চমেক, সিভাসু, চুয়েট, নোবিপ্রবি ও ক্রিকসএর সংশ্লিষ্ট গবেষকগণ তাদের গবেষণা কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। গবেষণা মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল শিশুকিশোরদের রোবটশো ও বুয়েটের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্ভাবনা পরিবেশনা। এতে জামাল নজরুল ইসলাম স্মারক বক্তৃতায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবি পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন এবং বুয়েটের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তারিক আরাফাত। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুগলের বিজ্ঞানী ও যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ইয়াসির খান। বিশেষ বক্তা ছিলেন লন্ডনের ওডিয়াই ইন্টারন্যাশনালের প্রধান গবেষক ড. নিকোলা জোনস। শেষে ‘জামাল নজরুল ইসলাম গবেষণা অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে ২৪ ঘণ্টায় আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলী বেপজা পাবলিক স্কুল ও নেভী এ্যাংকরেজ স্কুলের জয়