লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার বিএনপির ডাকা কর্মসূচির সমালোচনা করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। দেশে গণ্ডগোল লাগাতেই এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ভয়াবহ লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার দেশের সব জেলা শহরে বিদ্যুৎ অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এ প্রসঙ্গে গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি–জামায়াত সব সময় এক আছে, ওরা কোনো সময় বিচ্ছিন্ন হয়নি, মাঝেমধ্যে মৌনতা অবলম্বন করে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা গণ্ডগোল করার চেষ্টা করবে, সেই গণ্ডগোল করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সামনে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছে। এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, গণ্ডগোল করার উদ্দেশ্যে দিয়েছে। সেই গণ্ডগোল তাদের করতে দেওয়া হবে না। আমরাও সতর্ক আছি, বিএনপি–জামায়াতকে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় সেটি জনগণও জানে। খবর বিডিনিউজের।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের আওতায় ছিল জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। আজ থেকে সাড়ে ১৪ বছর আগে মানুষ গ্রামেগঞ্জে বিদ্যুৎ দিয়ে বড়জোর ফ্যান চালাত আর লাইট জ্বালাত। এখন গ্রামে গ্রামে এসি, রেফ্রিজারেটর, মসজিদে এসি, ধর্মীয় উপসনালয়ে এসি চলছে। ইজিবাইক, প্রেসার কুকার, রাইস কুকার সবগুলো বিদ্যুৎ সুবিধার মাধ্যমে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি সরকারের বিরাট সাফল্য।
তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে একটু বিদ্যুৎ চলে গেলে যেভাবে উসখুশ করছি আমরা, এত বড় সাফল্য সেটাতে তো আমি মনে করি মানুষ আগের তুলনায় ভালো আছে। এখন মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে এটি সঠিক। বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেছেন ১৫ দিনের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন হবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাওয়ে বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, ওরা তো বিদ্যুৎকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এবার যদি সেটা করে তাহলে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে, উচিত শিক্ষা দেবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তুত আছে। তারেক রহমান খাম্বা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি করে বিদ্যুতের খাম্বা বানিয়েছিল, বিদ্যুৎ না দিয়ে শুধু খাম্বা লাগিয়েছিল। আমি আশা করব তারা যখন বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘেরাও করতে যাবে প্রতীকী হিসেবে খাম্বা নিয়ে যাবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতিবাচক, ধ্বংসাত্মক, মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতি, নির্বাচন প্রতিহত করা, বয়কট করার অপরাজনীতির কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করায় নির্বাচন প্রতিহত ও বর্জন করবে–এমনটা বিএনপির বলার সুযোগ নেই বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাদেরকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন প্রতিহত করার রাজনীতি তাদের পক্ষে আর করা সম্ভবপর নয়। তাদেরকে অনুরোধ জানাব, দেশে গণ্ডগোল করার পরিকল্পনা না করে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করুন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধের জন্য সরকার নানা ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কর্মসূচি ঘোষণা করবে, এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে বিএনপি–জামায়াতের কর্মসূচি কিন্তু সহিংসতা করার লক্ষ্যেই সাজাচ্ছে বলে আমরা মনে করি।