পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়িতে চিকিৎসক সংকটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। করোনাকালেও খাগড়াছড়িতে প্রয়োজনের অর্ধেক চিকিৎসক ও নার্স নিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা। এতে করে কাঙ্ক্ষিত সেবা পেতে যেমন ভোগান্তিতে পড়ছে রোগী ও স্বজনরা। অন্যদিকে বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সরা। জেলা সদর হাসপাতাল থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত উপজেলার একই চিত্র। চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্য সেবা খাতে নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খাগড়াছড়িতে ১শ ২৯ জন চিকিৎসকের মঞ্জুরি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ৭৪ জন। ২শ ২৫ জন নার্সের বিপরীতে আসেন ১শ ১৫ জন। জানা যায়, খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল কাগজে কলমে এক’শ শয্যার হলেও ৫০ শয্যার জনবলে চলছে ১০ বছরের বেশী সময় ধরে। বিশ জন চিকিৎসকের বিপরীতে জরুরি বিভাগসহ ৪ জন মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য। উপজেলা পর্যায় থেকে প্রেষণে বা সংযুক্তিতে সদরে চিকিৎসক আনায় উপজেলায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসকের পাশাপাশি শূন্যপদ রয়েছে নার্সেরও। এতে করে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিয়ে ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। দ্রুত চিকিৎসক সহ প্রয়োজনীয় জনবল পদায়নে সরকারের হস্তক্ষেপ চান জনপ্রতিনিধিরা। হাসপাতালে সেবা নিতে রোগীরা জানান, অনেক আগে এসেও চিকিৎসাকেও দেখা পাচ্ছি। সিরিয়াল পাওয়ার পরও অনেক ধরে অপেক্ষা করছি।
দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার জানান, সেবা দিতে যে পরিমাণ জনবল দরকার সেই পরিমাণ জনবল নেই। গতমাসেও আমাদের তিনজন চিকিৎসক বদলি হয়ে গেছেন। মাত্র ৩ চিকিৎস দিয়ে সেবা কার্যক্রম চলছে। চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের দাবি জানিয়েছে জনপ্রতিনিধিরা। দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাশেম জানান, দীঘিনালা আয়তন ও জনসংখ্যায় বড় উপজেলা। পার্শ্ববর্তী দুইটি উপজেলার মানুষ এখানে চিকিৎসা নিতে আসে। কিন্ত এখানে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানাই। সংকটের মাঝে চিকিৎসা রাত দিন সেবা দিয়ে যাচ্ছে আরো কিছু পেলে উপজেলার জনগণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবে না। চিকিৎসক সংকটের মধ্যেও ১৮ চিকিৎসক উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে যাওয়ায় উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে অধিদপ্তরে জানানোর পরও করোনা পরিস্থিতির কারণে পদায়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ।