কৃষি ও কৃষকের সুখ-দুঃখ

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকবি রবি ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতার পংক্তি উচ্চারণে বাংলা নামক এই গ্রামীণ জনপদের কৃষক কূলের যন্ত্রণাকাতর আর্তনাদ উপস্থাপন করতে চাই। ‘শুধু বিঘেদুই ছিল মোর ভুঁই, আর সবই গেছে ঋণে।/ বাবু বলিলেন, ‘বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।’/ কহিলাম আমি, ‘তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই-/ চেয়ে দেখো মোর আছে বড়জোর মরিবার মতো ঠাঁই।’………..কহিলাম তবে বক্ষে জুড়িয়া পাণি সজল চক্ষে, ‘করুন রক্ষে গরিবের ভিটে খানি।’ কৃষি ও কৃষকের সুখদুঃখ পর্যালোচনায় রবীঠাকুরের এ মর্মস্পর্শী কবিতাখানির দৃশ্যপটে কিছুটা পরিবর্তন সাধিত হলেও এখনও অনেক ক্ষেত্রে এর প্রযোজ্যতা নিবিড় বিশ্লেষণের দাবি রাখে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদবৃষ্টিবন্যাখরা এবং জীবন ঝুঁকির সকল দুর্যোগকে উপেক্ষা করে দেশবাসীকে যারা খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করছেন; তাদের জীবন সংগ্রামের কথা আমাদের বোধে আদৌ প্রোথিত কিনা তা ভেবে দেখার বিষয়।

মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মহান স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই কৃষি কার্যক্রম জোরদারকরণের উদ্দেশ্যে ‘কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে’ স্লোগান তুলে দেশে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বেতার ও টেলিভিশনে ভাষণদানকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমাদের সমাজে চাষিরা হলেন সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত শ্রেণি এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ বঙ্গবন্ধু তাঁর নেতৃত্বে প্রণীত দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩৭৮) কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে মোট উন্নয়ন বরাদ্দের ৩১ শতাংশ অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে এ অভিপ্রায়ের প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন। দেশের আর্থিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে কৃষি উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন বিভিন্ন গবেষণাসম্প্রসারণআর্থিক প্রতিষ্ঠান। তিনি ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজমির খাজনা রহিতকরণ, জমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা পরিবারপ্রতি ১০০ বিঘা নির্ধারণ করে ভূমিহীন কৃষকদের ওই জমি বিতরণ, পাকিস্তান আমলের সব কৃষিঋণ মওকুফ এবং কৃষকদের বিরুদ্ধে করা সব সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করে দেশের কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার দেশের কৃষিকে বিশ্বপরিমন্ডলে উঁচুমার্গে মর্যাদাসীন করেছেন। কৃষির আধুনিকায়ন, নতুন নতুন উদ্ভাবন এবং সার উৎপাদনআমদানিতে সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার ফলে দেশ কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে চার বার সারের দাম কমানো, ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খোলা, সেচের পানির ভুর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের ব্যাংক হিসাবে জমাদান, প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ কৃষকের মাঝে উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ, বর্গাচাষীদের জন্য জামানতবিহীন কৃষিঋণ প্রদানের ব্যবস্থা এবং প্রায় ১ হাজার ৪০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা প্রণোদনা প্রদানের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলে কৃষিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ‘কৃষিবিদ দিবস ২০২১’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের কৃষি অনুকূলনীতি ও প্রণোদনায় কৃষক এবং কৃষিবিদদের মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে অবদান রাখছে। অধিক জনঘনত্বের দেশে নিত্য ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে কৃষি উৎপাদনের ক্রমবৃদ্ধি বিশ্বের কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার।’

এটি সর্বজনবিদিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্যের স্বীকৃতি অনুযায়ী, করোনা মহামারি অতিক্রান্তকালে দেশের অব্যাহত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে কৃষির ১১ খাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। বিশিষ্টজনেরা এটিকে দেশের জন্য বিশাল প্রাপ্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কৃষি ও খ্যাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা, চালসহ কৃষিপণ্য, প্রক্রিয়াজাত মাছমাংস রপ্তানিতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ একের পর এক স্বীকৃতি পাচ্ছে। দেশের জনসংখ্যার আধিক্য এবং জলবায়ুর প্রভাবে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাওয়াসহ বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও নানান প্রাকৃতিক বৈরীতা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে ধান উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ প্রায় চার কোটি টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড তৈরি করেছে। শুধু উৎপাদন বৃদ্ধি নয়; হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদনেও অধিকাংশ দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহারণ। ধানের উৎপাদন তিনগুন বৃদ্ধির পাশাপাশি গম দ্বিগুন, সবজি পাঁচ গুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ।

বিগত এক যুগে রীতিমতো দেশে ঘটে যাওয়া সবজিবিপ্লবের ফলশ্রুতিতে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়। বর্তমানে দেশে ৬৫৪ জাতের সবজি চাষের মাধ্যমে বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ টন সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। দেশে মাথাপিছু সবজি ভোগের পরিমাণ ৮০ গ্রাম। সবজি উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম চীন ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। সরকারিবেসরকারি সংস্থাগুলো সারাবছর চাষের উপযোগী হাইব্রিড বা উচ্চ ফলনশীল বীজ উদ্ভাবন এবং বাজারজাতকরণের ফলে সবজি চাষে সাফল্য এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাব মতে বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে। বর্তমানে ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। ২০০৭২০০৮ অর্থবছরে ২ লাখ ৬০ হাজার টনের বিপরীতে ২০১৯২০ সালে মোট ইলিশ উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। গবেষকদের মতে, ২০২০ সালে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।

এফএও’র তথ্য অনুসারে, মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। সমুদ্রজয়ের ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস আহরণের ক্ষেত্র বৃদ্ধি পেয়েছে। মুক্ত জলাশয় এবং ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা লাখ লাখ পুকুরে মাছ চাষে দেশে রূপালি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে মোট কৃষিজ আয়ের শতকরা ২৪ ভাগের বেশি অবদান মৎস্য খাতে। উক্ত সংস্থার মতে ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে সাফল্য অর্জন করবে তাতে বাংলাদেশ প্রথম হবে। এরপর থাকবে থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন। এছাড়াও কৃষিক্ষেত্রে অন্যান্য সাফল্যের মধ্যে রয়েছেবিশ্বে পাট রপ্তানিতে প্রথম, আলু উৎপাদনে ষষ্ঠ, কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, ছাগলের দুধ উৎপাদনে দ্বিতীয়, ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ, আম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অস্টম। তাছাড়া জলবায়ু সহিষ্ণু ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের বিজ্ঞানীদের সফলতা বাড়ছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ১০৯টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। ব্রি এবং বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা লবণসহিষ্ণু ৯টি, খরাসহিষ্ণু ২টি ও বন্যাসহিষ্ণু ৪টি সহ মোট ১৭টি জলবায়ু সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। বাংলাদেশের গবেষকরা বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এতগুলো প্রতিকূল পরিবেশ সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবনের দিক থেকেও বাংলাদেশ বিশ্ব শীর্ষ দেশ।

আমাদের সকলের জানা বর্তমান সময়ে কৃষিপ্রযুক্তি প্রসারে যুক্ত হয়েছে ইকৃষি। কৃষি সমস্যা সমাধানে মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে বাড়ি থেকে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পাচ্ছেন গ্রামের কৃষকেরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে স্থাপিত ‘কল সেন্টার’ থেকে টেলিফোনে কৃষকদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও কৃষিপণ্য বিপণনে ইকমার্স উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে কুরবানির পশু, শাকসবজি এবং ফলমূলও বিক্রি হচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এগিয়ে চলার পাশাপাশি কৃষিকাজের ও পণ্য বিক্রির প্রক্রিয়াও ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় চলে এসেছে। তবে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণজ্ঞানসরঞ্জাম না থাকায় আমাদের দেশের কৃষকদের অংশগ্রহণের হার খুবই কম। অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ অনুসারে, দেশের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে হলে কৃষির বহুমুখীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণের বিকল্প নেই। বর্তমানে বাংলাদেশের মোট শ্রম শক্তির ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ কৃষ খাতে নিয়োজিত। কৃষিতে উল্লেখ্য পন্থার আলোকে মোট শ্রমশক্তির শতকরা ৮০ ভাগকে নিয়োজিত করে দেশে কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন সম্ভব।

২৫ জানুয়ারি ২০২২ গণমাধ্যম সূত্রমতে, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট (সিএসএডব্লিউএমপি)’ নামে একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে তা কৃষির বহুমুখীকরণ ও প্রান্তিক চাষির জীবনযাত্রা উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বিক দারিদ্র্য বিমোচনে আবদান রাখবে। প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুসারে, প্রকল্প এলাকায় অন্তত ১২টি স্মার্ট প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করার মধ্য দিয়ে কৃষিতে প্রয়োজনীয় সেচের পানির ব্যবহার এখনকার তুলনায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। প্রকল্প এলাকায় প্রতিবছর ১২০ টন দানাদার বীজ, ৪০ টন ডাল ও সমপরিমাণ তেলজাতীয় শস্যের বীজ উৎপাদন করা যাবে। প্রকল্পে প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হলো কৃষকের মাঝে বিভিন্ন ধরনের ৩ হাজার ২০০টি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা। যন্ত্রপাতিগুলো হচ্ছেবারিড পাইপ, সোলার সিস্টেম, কম্বাইন্ড হারভেস্টার, মেইজ সোলার মেশিন, বীজের আদ্রতা পরিমাপক যন্ত্র, বীজ আলাদাকরণ চালুনি, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, বীজ সংরক্ষণ পাত্র ও জিজিটাল ওয়েট মেশিন ইত্যাদি। এছাড়াও প্রকল্পের অধীনে ২৩ হাজার সোলার সিস্টেম রাইস ট্রান্সপ্লান্টারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার বিষয়ক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা এবং সোলার সিস্টেম সেচ ও কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র থাকবে। উল্লেখ্য যে, ১০৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০২৬ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে দেশের ১৭টি জেলার ২৭টি উপজেলায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ১ হাজার গ্রামকে স্মার্টফার্মিংয়ের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিজ্ঞজনদের মতে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশের ছোট কৃষকদের অংশগ্রহণ খুবই প্রয়োজন। নতুন প্রযুক্তি ধারণবিস্তারে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও কৃষি উপকরণে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং বরাদ্দ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতিবাচক নীতিমালা গ্রহণ করা দরকার। এখনও প্রতিনিয়ত সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায় উৎপাদিত শস্য বিক্রি করে অধিকাংশ সময় উৎপাদন খরচেও তারা ভারসাম্য রাখতে পারে না। বিপুল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিঋণদায় এবং অপ্রকৃতস্থ মানসিক অস্থিরতায় শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেও; যথার্থ সুফল না পাওয়ার সংবাদই বেশি। কথিত রাজনৈতিক দুষ্টচক্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সিন্ডিকেটেড বাজার নিয়ন্ত্রণমধ্যস্বত্বভোগীচাঁদাবাজসন্ত্রাসীদের কদর্য ব্যভিচারে শস্যের উৎপাদনবিপণনে এমন অরাজকতাপ্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়; তা থেকে পরিত্রাণের উপায় অবশ্যই বের করা অত্যন্ত জরুরি। বছরের পর বছর বৈষম্যনিপীড়ননির্যাতনের কষাঘাতে জর্জরিত এসব অসহায় কৃষক চৌহদ্দিবিহীন যারপরনাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে গ্রামীণ বা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবেইনিঃসন্দেহে তা বলা যায়।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধনুরুল আমিন