আসন্ন ইউপি নির্বাচনে কর্ণফুলী উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থীদের অনেকেই মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া এবং লোহাগাড়ার ২৩ ইউনিয়নে গতবারের বিদ্রোহীদের ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে থাকলেও কর্ণফুলীতে এসে ছাড় দেয়া হয়েছে। এর ফলে দলের যোগ্য প্রার্থীরা মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন। এই নিয়ে ত্যাগীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা। মূলত উপরের মহলের আর্শীবাদ এবং নানাভাবে প্রভাব বিস্তারসহ তদবিরের কারণে কর্ণফুলী উপজেলার চার ইউনিয়নে গতবারের দলের বিদ্রোহীরাই মনোনয়নের দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে।
এবার কেন্দ্র থেকে পরিষ্কারভাবে বলে দেয়া হয়েছে, যারা গতবার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করেছেন তাদেরকে কোন অবস্থাতেই মনোনয়ন দেয়া হবেনা। জেলার নেতাদেরকেও বলে দেয়া হয়েছে গতবারের বিদ্রোহীদের নাম কেন্দ্রে না পাঠানোর জন্য। গতবার কর্ণফুলী এবং আনোয়ারায় বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নির্বাচিতও হয়েছেন। বিশেষ করে কর্ণফুলীর বিদ্রোহী চেয়ারম্যান এবং পরাজিত প্রার্থীরা এবারও নির্বাচনী মাঠে মরিয়া হয়ে নেমেছেন। তারা অনমনীয়। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও গতবারের মতো নির্বাচন করবেন বলে কর্ণফুলীর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ইউপি নির্বাচনে জুলধা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রফিক আহমদ (আনারস) ৪৫৩৯ পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুরুল হকে (নৌকা) পেয়েছেন ৩৩৩৮ ভোট। চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে মোহাম্মদ আলী (নৌকা) ৯৩২৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। অপরদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী নাজিম উদ্দিন হায়দার পেয়েছিলেন মাত্র ২৭ ভোট। চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে হাজী ছাবের আহমদ নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। ওই ইউনিয়নে কোন বিদ্রোহী ছিলনা। শিকলবাহা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম (আনারস) ১২৪৭৮ পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল কালাম বকুল (নৌকা) পেয়েছিলেন ৬৮৫০ ভোট। বড়উঠান ইউনিয়নে মো. দিদারুল আলম (নৌকা) ৮৪৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল মন্নান খান (আনারস) পেয়েছিলেন ৫৩৬২ ভোট।
উল্লেখ্য, চতুর্থ ধাপে আগামী ২৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর ৪ ইউনিয়নে, পটিয়ার ১৭ ইউপিতে এবং লোহাগাড়ার ৬ ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৯ নভেম্বর, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর।