চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রস্তাবিত পৌরকর বাতিল ও আয়তনের উপর গৃহকর নেয়ার দাবিতে আজ বুধবার টাইগারপাস নগর ভবন ঘেরাও করবে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। সকাল ১১টায় নগরের কদমতলী আবুল খায়ের মেম্বার চত্বরে জড়ো হবেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এরপর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নগর ভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তারা। সুরক্ষা পরিষদের নেতৃবৃন্দের দাবি, নগরের ৪১ ওয়ার্ড থেকে সাধারণ করদাতারা তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।
জানা গেছে, মেয়রের প্রস্তাবে মন্ত্রণালয় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করায় ২০১৭ সালের পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়নের (রিঅ্যাসেসমেন্ট) আলোকে ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে কর আদায়ে কার্যক্রম শুরু করে চসিক। যার প্রতিবাদ জানিয়ে একই বছরের ২৩ আগস্ট থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ।
সর্বশেষ গত ৩০ জানুয়ারি কদমতলীর সমাবেশ থেকে নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরপর গত সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি বহাল থাকার কথা জানান সংগঠনটির নেতারা। এ সময় গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করলেও মেয়র ‘কর্ণপাত’ না করায় বাধ্য হয়ে ‘নগর ভবন ঘেরাও’ কর্মসূূচি ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পপি নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি প্রসঙ্গে আজাদীকে বলেন, ৪১ ওয়ার্ডে আমরা সভা করেছি। লিফলেট বিতরণ করেছি। স্থানীয় লোকজনই আমাদের বলছেন, নগর ভবন ঘেরাও করতে। তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। আশা করছি সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেবেন।
জানা গেছে, চসিকের পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়ন শেষে ২০১৭–২০১৮ অর্থবছরে নগরের সরকারি–বেসরকারি এক লক্ষ ৮৫ হাজার ২৪৮টি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ৮৫১ কোটি ৩০ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৯ টাকা পৌরকর আদায়ের প্রস্তাব করা হয়; যা পূর্বে ছিল ১৩১ কোটি ৯১ লাখ ৮৭ হাজার ৪১ টাকা। অর্থাৎ এক লাফে ৫৪৫ দশমিক ৩২ শতাংশ গৃহকর বৃদ্ধি পায়।
করদাতারা বলছেন, পূর্বে ভবনের মূল্যায়ন করা হতো বর্গফুটের ভিত্তিতে। কিন্তু ২০১৭–২০১৮ অর্থবছরে রিঅ্যাসেসমেন্ট করা হয় ভবনের ভাড়া বা আয়ের বিপরীতে। এতে এক লাফে কর বহু গুণ বেড়ে গিয়েছিল। ওই সময় করদাতা সুরক্ষা পরিষদের আন্দোলন ও নগরবাসীর আপত্তির পর মন্ত্রণালয় স্থগিতাদেশ দেয়ায় ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে ‘বর্ধিত’ সেই গৃহকর আদায় করেনি চসিক।
বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রস্তাব দেয় চসিক। এর প্রেক্ষিতে একই বছরের ১৮ জানুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।