কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচরে রোহিঙ্গারা হাজার গুণ বেশি ভালো আছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাক্তার হাবিবে মিল্লাত এমপি। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন এবং ত্রাণ বিতরণ শেষে চট্টগ্রাম ফিরে গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে পতেঙ্গা বোট ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
ডাক্তার হাবিবে মিল্লাত বলেন, আমরা ভাসানচরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তাদের সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। এছাড়া সেখানে ৫০০ পরিবারের মাঝে হাইজিন কিট, ডিগনিটি কিট, স্লিপিং ম্যাটস, কম্বল ও পানির জেরিকেন ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। ভাসানচরে তাদের জন্য রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এই মানবিক সহযোগিতা চলমান থাকবে। তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে টিম পাঠাবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর। তারা সেখানে থাকবে। সারাদেশে যেভাবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর কাজ করে রোহিঙ্গারাও সেই সুবিধা পাবে।
ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, রোহিঙ্গাদের ম্যানেজ করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জের। কারণ ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে। এটি সকলের জন্য চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সত্য কথা হলো আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে অভ্যস্ত। আমাদের কাছে কক্সবাজারের চাইতে ভাসানচরে চ্যালেঞ্জ অনেক কম। বাংলাদেশ নেভি যেভাবে কাজগুলো গুছিয়ে নিয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে এখানে সমস্যা অনেক কম। ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের আগামী তিনমাস রেড ক্রিসেন্ট খাদ্য সহায়তা দেবে জানিয়ে হাবিবে মিল্লাত বলেন, যেহেতু সেখানে যাতায়াত ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে, রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে সেখানে সহায়তা করা হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের কাউকে হাতের কাজ, কাউকে সবজিচাষ শেখানো হবে, যাতে তারা ব্যস্ত থাকে। এছাড়া তারা যেহেতু মানসিক ক্ষত নিয়ে মিয়ানমার থেকে এসেছে, তাদের সাইকো স্যোশাল সাপোর্ট দেয়া হবে। আমরা তাদের বলে এসেছি কী কী লাগবে আমাদের জানাতে। আমরা তাদের পূর্ণ সুবিধা দেব।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমেদ মজুমদার বলেন, ভাসানচরে প্রায় ১৩টি আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা আমাদের সাথে কাজ করছে। আমাদের ভূমিকা তাদের আস্বস্ত করবে। ধীরে ধীরে তারা বিষয়টি বুঝতে পারবে। সময়ের সাথে সাথে তারা অবশ্যই স্বীকার করবে কক্সবাজারের চেয়ে ভাসানচরে তারা অনেক ভালো আছে।
রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এমএ সালামের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলাল, ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য ডা. শেখ শফিউল আজম, অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, মহাসচিব মো. ফিরোজ সালাহ্ উদ্দিন, সোসাইটির ডিজাস্টার রেসপন্স বিভাগের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
সমপ্রতি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত এসব রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন এই জায়গায় সোসাইটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের মানবিক সহায়তা যেমন- স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও পয়োনিষ্কাশন, ফুড ও নন ফুড আইটেম, ডিআরআর কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।