ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাউজান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিশ্চিত করে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন ১৪জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। ধারণা করা হচ্ছে- সরকার দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নির্বাচনে এবারও বিনাপ্রতিন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। একইসাথে অনেক ইউনিয়নে মেম্বার পদেও ওয়ার্ডে পর্যায়ে একক প্রার্থী হওয়ার আবাস মিলছে। উল্লেখ্য, আগামী ২ নভেম্বর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন, ২৮ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় সূত্র জানায়- এবার যারা প্রতীক নিশ্চিত করেছেন তাদের মধ্যে ১১জনই বর্তমান চেয়ারম্যান। এই পদে নতুন আসছেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে কদলপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, নোয়াপাড়া ইউনিয়নে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া, বিনাজুরীতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রবীন্দ্র লাল চৌধুরী। স্থানীয় জনসাধারণ ও দলীয় সূত্রে আবাস পাওয়া যাচ্ছে- অধিকাংশ ইউনিয়নে পুরুষ মেম্বার ও সংরক্ষিত মহিলা আসনেও একক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যমতে এসেছেন। এক্ষেত্রে পুরনো অনেক মেম্বার বাদ পড়ছেন। তাদের স্থানে আনা হচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের। গতকাল রোববার পাহাড়তলী ইউনিয়নে নির্বাচনী মনোনয়নপত্র জমাদান সংক্রান্ত দলীয় এক প্রস্তুতি সভায় সিদ্ধান্ত হয়- মেম্বার পদে একক প্রার্থী দেবেন। এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীসহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন। তিনি মেম্বার পদে একক প্রার্থী দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন- সভা ডেকে যাদের মেম্বার পদের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে তারা সকলে সৎ ও যোগ্য। প্রার্থী নির্বাচন সম্পর্কে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কাজী আবদুল ওহাব বলেন-গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তৃণমুলের মতামতের ভিত্তিতে উপজেলা থেকে পাঠানো প্রার্থীর তালিকা দেখে কেন্দ্র থেকে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনি জানান- এখানকার নেতাকর্মীরা দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তারা সকলেই স্থানীয় রাজনৈতিক অভিভাবক এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির প্রতি অনুগত। সুতরাং এখানে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী হবে না, সেটি নিশ্চিত।
উল্লেখ্য, গত ২০১৬ সালে ৭ মে’র ইউপি নির্বাচনে রাউজানের ১৪ ইউনিয়নের ১১ জন চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হয়েছিল। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে- কদলপুর, নোয়াপাড়া ও বিনাজুরী। বিনাজুরী ও নোয়াপাড়ায় আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন ওই সময় দুই বিএনপি প্রার্থী। ভোটের দিন বিএনপির দু’প্রার্থী ভোটের পরিবেশ না থাকার দাবি করে নির্বাচন বয়কট করলে ফলাফল নৌকার প্রার্থীর পক্ষে যায়। ওই নির্বাচনে কদলপুরে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী ছিলেন মোজাহির উদ্দিন চৌধুরী লিংকন। তার বিপরীতে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তসলিম উদ্দিন চৌধুরী। নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে ওই নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
নির্বাচনে উপজেলার ১৪ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা হলেন- কদলপুর ইউনিয়নে ব্যাংকার নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, হলদিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম, ডাবুয়ায় চেয়ারম্যান আবদুর রহমান চৌধুরী লালু, নোয়াজিশপুরে চেয়ারম্যান এম সরোয়ার্দ্দি শিকদার, চিকদাইরয়ে চেয়ারম্যান প্রিয়োতোষ চৌধুরী, গহিরায় চেয়ারম্যান নুরুল আবসার বাশি, রাউজান সদরে চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, পাহাড়তলীতে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন, বাগোয়ানে চেয়ারম্যান ভুপেষ বড়ুয়া, পূর্বগুজরায় চেয়ারম্যান এম আব্বাস উদ্দিন, পশ্চিম গুজরায় চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ, উরকিরচরে চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল, নোয়াপাড়ায় বাবুল মিয়া,বিনাজুরীতে রবীন্দ্র লাল চৌধুরী।