ক্ষমা চাইলেন পরীমনিকে রিমান্ডে পাঠানো দুই হাকিম

| সোমবার , ১ নভেম্বর, ২০২১ at ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরী মনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর বিষয়ে আর ব্যাখ্যায় না গিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ঢাকার দুই মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম। তারা বলেছেন, ভবিষ্যতে রিমান্ড মঞ্জুর বা বিচারিক দায়িত্ব পালন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন, রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করবেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল আর করবেন না। খবর বিডিনিউজের।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চে গতকাল রোববার তাদের এ আবেদন উপস্থাপন করা হয়। দুই হাকিমের পক্ষে আইনজীবী আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল তা উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। এছাড়া রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও পরীমনির আইনজীবী মো. মজিবুর রহমানও শুনানি করেন।
গত ৪ অগাস্ট ঢাকার বনানীর বাসা থেকে র‌্যাব পরী মনিকে গ্রেপ্তারের পর মাদকের মামলায় তিন দফায় মোট টানা সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রায় এক মাস পর জামিনে তিনি মুক্তি পান। পরীমনিকে বার বার রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃস্ফূর্ত রুল চেয়ে গত ২৯ আগস্ট হাই কোর্টে আবেদন করে মানবাধিকার ও আইনি সহায়তাকারী সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

আইনজীবী জুয়েল বলেন, পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করার ব্যাখ্যা তলব করেছিলেন আদালত। আজ উনাদের পক্ষে আমি নিঃশর্ত মার্জনা চেয়ে একটি আবেদন করেছি। সে আবেদনের শুনানির পর আদালত আগামী ২৫ নভেম্বর রায়ের জন্য রেখেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর ক্ষেত্রে দুই হাকিম কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন- জানতে চাইলে এ আইনজীবী বলেন, যখন নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া হয়, তখন আর কিছুর ব্যাখ্যার প্রয়োজন পড়ে না। ঢাকার দুই মহানগর হাকিমের আগের ব্যাখ্যায় অসন্তুষ্ট হাই কোর্ট গত ২৯ সেপ্টেম্বর ফের ব্যাখ্যা দিতে বলে গত ২৪ অক্টোবর শুনানি ও পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছিল। সেদিন দুই মহানগর হাকিম ব্যাখ্যা দিতে আরও এক সপ্তাহ চেয়েছিলেন। সেই সময়ের মধ্যে রোববার তারা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে জেড আই খান পান্না বলেন, এটা পরিষ্কার যে তারা দুই হাকিম সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। এখন হলফনামা দিয়ে তারা বলছেন, তারা ‘যথাযথ প্রশিক্ষণ পাননি’। অ্যাটর্নি জেনারেলও একই কথা বলেছেন। আইন-শৃক্সখলা বাহিনীর হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে আইনের অপব্যবহার চলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, দুই মহানগর হাকিম রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে যে প্র্যাকটিস করেছেন, সে প্র্যাকটিস থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, আগামী ২৫ নভেম্বর সব কিছু মিলিয়ে আমরা রায় দেব। যতগুলো প্রশ্ন উঠেছে, সবগুলো প্রশ্নের জবাব রায়ে আমরা উল্লেখ করে দেব। সব মিলিয়ে আমরা একটি নীতিমালা দেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
পরবর্তী নিবন্ধএবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে!