রপ্তানিতে ভারত মূল্য বেঁধে দেওয়ার প্রভাবে আবারও ঝাঁজ বাড়ছে পেঁয়াজের। গত দুদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়েছে। এছাড়া খুচরা বাজারে একদিনেই বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে কপালে ভাঁজ পড়ছে ভোক্তাদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ ছাড়া অন্য কোনো দেশের পেঁয়াজ নেই। ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তাই তাদের দেশেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ভারত নিজেদের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রতি টন পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর প্রভাবে মূল্য বাড়ছে। ভোক্তারা বলছেন, ভারত মাত্র রপ্তানিমূল্য বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। পাইকারি কিংবা খুচরা বাজারে এসব বাড়তি মূল্যের এক কেজি পেঁয়াজও আসেনি। অথচ ভোক্তাদের কাছ থেকে একদিনেই কেজিতে ২০ টাকা বাড়তি নিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এটা অরাজকতা।
গতকাল চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ১০০–১০৫ টাকায়। দুদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৭৫–৮০ টাকায়। অপরদিকে খুচরা বাজারে একদিন আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়। গতকাল সেই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকায়। অর্থাৎ একদিনেই দাম বেড়েছে ২০ টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের এক আড়তদার বলেন, বর্তমানে খাতুনগঞ্জে যেসব পেঁয়াজ রয়েছে সেগুলো বাজার পর্যন্ত আসতে খরচ পড়েছে কেজিপ্রতি ৭০ টাকা। কিন্তু ভারত রপ্তানিমূল্য বেঁধে দেওয়ার ঘোষণার পরপর প্রতি কেজিতে ৩৫ টাকা মুনাফা করছেন আমদানিকারকরা।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের বাজার গত দুদিন ধরে বাড়তি। আসলে ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের সংকট রয়েছে। সেখানেও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত তাদের বাজার নিয়ন্ত্রণে রপ্তানিমূল্য বেঁধে দিয়েছে। স্থলবন্দরগুলোতে ইতোমধ্যে দাম বেড়েছে। তাই বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন আজাদীকে বলেন, দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। তারা একেক সময় একেক অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করেন। এখন বলছে, ভারত রপ্তানিমূল্য বাড়িয়েছে, তাই দাম বেড়েছে। বাজারে বর্তমানে যেসব পেঁয়াজ আছে, সেগুলো তো দুই সপ্তাহ আগে আমদানি করা। প্রশাসনের উচিত পেঁয়াজের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য যাচাই করে অভিযান পরিচালনা করা।
উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবর পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম ঠিক রাখতে রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দিয়েছে ভারত। ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড বা বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের কার্যালয় জানায়, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ২৯ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।