উচ্ছেদ করা জায়গা দখলমুক্ত রাখতে মনিটরিং জোরদার চসিকের

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৭ জুলাই, ২০২১ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

মাত্র তিন দিন আগে গত শনিবার নগরের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল সংলগ্ন সড়ক ও ফুটপাত থেকে পানির টাংকি পর্যন্ত অংশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পরিচ্ছন্ন বিভাগ। কিন্তু আবারো এ অংশের বিভিন্ন স্থান দখল করে নেয় অবৈধ দখলদাররা। এর আগে দুদক কার্যালয়ের সামনেও উচ্ছেদ অভিযান চালায় চসিক। পুনর্দখল হয় ওই এলাকাও। এমন পরিস্থিতিতে উচ্ছেদ হওয়া এলাকা সম্পূর্ণ দখলমুক্ত রাখতে মনিটরিং জোরদার করছে চসিক। এর অংশ হিসেবে গতকাল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনের সড়ক ও দুদক কার্যালয়ের সামনে আবারো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ১০ থেকে ১২ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এদিকে সংস্থাটির চলমান ক্রাশ প্রোগ্রামের আওতায় গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিভিন্ন নালা-নর্দমা থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হয়।
মেয়রের পর্যবেক্ষণ : চসিকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম ও উচ্ছেদ অভিযান পর্যবেক্ষণ করেছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। পর্যবেক্ষণকালে মেয়র যেখানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বা হচ্ছে সেখানে আবার যাতে স্থাপনা গড়ে না উঠে সে ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী, প্রশাসন ও নগরবাসীকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জনান।
পরিকল্পিত নগরায়ন এবং খাল ও বিস্তীর্ণ জলাশয় বিলুপ্তিই নগরে জলাবদ্ধতার অন্যতম প্রধান কারণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন একমাত্র সমাধান নয়। বরং যে কারণে এ সমস্যা হচ্ছে তা চিহ্নিত করে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ ও পরিকল্পনা নিয়ে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে বিলুপ্ত খাল পুনরুদ্ধারসহ আরো একাধিক নতুন খাল খনন, পানি স্থিত হওয়ার জন্য জলাশয় সৃষ্টি এবং সর্বোপরি কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা রক্ষায় ক্যাপটিাল ড্রেজিং চলমান রাখতে হবে। এসব করা না হলে নগরীতে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা নিরসন তো হবেই না, বরং চট্টগ্রাম বন্দরের অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, অনেকগুলো খাল বিলুপ্ত হয়েছে। কর্ণফুলী নদী বেদখল হয়ে সরু হয়েছে। বড় ও বিস্তীর্ণ জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। পাহাড়-টিলা অবিরাম কর্তন হওয়ায় পাহাড় থেকে বর্ষার ঢলে বালিয়ারি মাটি নেমে এসে বড় নালা ও খালের অস্তিত্ব মুছে দিয়েছে। জলাশয় ও খালগুলো অপরিকল্পিত নগরায়ন ও বড় বড় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্প গ্রাস করে ফেলেছে। এতে ভরা বর্ষায় পানির ঢল স্থিত হবে কোথায় এবং কোন পথ দিয়ে নদীতে গিয়ে পড়বে? পানি নদীতে গিয়ে পড়লেও নাব্যতা সংকটে তার ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।
মেয়র বলেন, এক সময় নগরে বগার বিল ও ডাকাইত্যা বিলের মত অনেকগুলো বিস্তীর্ণ জলাশয়, দীঘি ও পুকুর ছিল। সেখানে ভরা বর্ষার পানি এসে স্থিত হতো। তারপর স্থিত পানি ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাল হয়ে কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে গিয়ে পড়তো। এখন নগরীতে কোন বিস্তীর্ণ জলাশয় নেই। দেড় ডজনেরও বেশি খালের অস্তিত্ব মুছে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফাঁসি দিয়ে সমাজকে অপরাধমুক্ত করা যায় না : প্রধান বিচারপতি
পরবর্তী নিবন্ধপার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন নিখিল কুমার চাকমা