ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসীতসহ ২৭ নেতাকর্মীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

রাঙামাটি প্রতিনিধি | বুধবার , ১০ নভেম্বর, ২০২১ at ৮:৩১ অপরাহ্ণ

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসাসহ তার দলের ২৭ নেতাকর্মীকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আজ বুধবার (১০ নভেম্বর) রাঙামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফারুক পত্রিকায় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদেরকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতে মামলার বিচার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

আসামিরা হলো ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসা (৫৪), রঞ্জন মনি চাকমা জেনিট(৫২), সবিচ চাকমা সজল সুকর্ণ (৫৭), শান্তিদেব চাকমা সানি(৫০), সুমেট চাকমা(৪৫), উদয় শংকর চাকমা(৫২), প্রমোদ বিকাশ খীসা(৫৩), অমর জীবন চাকমা(৫৫), সর্বানন্দ চাকমা মকানন্দ (৪১), কানন কুসুম চাকমা (৪৭), রবিচন্দ্র চাকমা (৪৮), বিমল চাকমা উদয় (৫০), সুবিকাশ চাকমা(৩৭), সুজন মনি চাকমা (৩২), মধুরঞ্জন চাকমা (৪৮), অনিল চাকমা (৩০), সুপন চাকমা সুশীল জীবন (৫২), জ্যোতিলাল চাকমা (৫২), বিদ্যাময়ী ডিএম (৪০), অমর কান্তি চাকমা (৫০),কালামনি চাকমা (৩০), বৌধিসত্য চাকমা রিচার্জ(৪৪), বাবুল চাকমা(৩৫), তুষাণ চাকমা (৩০), সুশীল চাকমা (৩০), রহিম চাকমা(২৫), বিবিদ রতন চাকমা (২২)।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল নানিয়ারচর থানায় কালুময় চাকমা হত্যার অভিযোগে ২৭ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করা হয়।

আদালতের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ‘তফসিলভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হইয়াছে এবং ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৮৭ ও ৮৮ ধারার বিধানমতে আসামিদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করা হইয়াছে সেহেতু এ আদালতে এরূপ বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে যে এ আসামিগণ গ্রেফতার এবং বিচার এড়ানোর জন্য পলাতক রহিয়াছেন বা আত্মগোপন করিয়াছেন এবং তাহাদের আশু গ্রেফতার হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই সেহেতু ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮এর ৩৩৯বি(১) ধারামতে নিম্ন তফসিলভুক্ত আসামিগণকে এ আদেশ পত্রিকায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হইবার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইল। ব্যর্থতায় আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচার অনুষ্ঠিত হইবে।’

নানিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন হালদার বলেন, “২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল কালুময় চাকমাকে নানিয়ারচরের তার বাসা থেকে তুলে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে বাথছড়ি শ্মশান থেকে কালুময় চাকমার দাহ করা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। কালুময় চাকমার হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার দায়ে এডমিশন চাকমা বাদি হয়ে ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিন্তু তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। আদালতেও তারা আত্মসমর্পণ না করায় পরবর্তীতে আদালত তাদের নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বা শান্তি চুক্তি সম্পাদন করে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। সেই সময় জেএসএস-এর সহযোগী সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসীত বিকাশ খীসা চুক্তির বিরোধিতা করে পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে ১৯৯৮ সালে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) গড়ে তোলেন।

এরপর ২০০০ সালে নানিয়ারচরে তিন বিদেশী অপহরণের ঘটনায় দেশে-বিদেশে আলোচিত হয়ে ওঠে ইউপিডিএফ। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রসীত বিকাশ খীসা দলটির শীর্ষনেতা হিসেবে রয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাতার প্রবাসী সুন্নী জনতার ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিল
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু