আধুনিক জগতের বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কারগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মোবাইল ফোন। মোবাইল এর অর্থ হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ, চলনশীল। সহজে বহন এবং যে কোনও স্থানে ব্যবহার করা যায় বলেই এর নামকরণ মোবাইল ফোন করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোনের সাথে আমরা সবাই পরিচিত। মোবাইল ফোন ছাড়া যেন চলাফেরা অকল্পনীয়। ছোট বড় ধনী গরিব প্রায় সকলের হাতে মোবাইল ফোন রয়েছে।
বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় সকল প্রযুক্তি মানুষের কাজকে সহজ করার জন্য বানানো হয়েছে। মোবাইল ফোন ও তার মধ্যে একটি। এখন মানুষ সময় দেখা থেকে শুরু করে ক্যালকুলেটর, অডিও, ভিডিও, ভ্রমণ, শিক্ষা, মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে ব্যবসা ও চিকিৎসাসহ প্রায় সব ধরনের সেবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নিয়ে থাকে। তাই এখন মোবাইল সেট মানুষের বিনোদনের অন্যতম উপাদান। কিন্তু বিপত্তি ঘটে তখনই যখন এই মোবাইল সেট অন্য জনের বিরক্তি ও বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। উচ্চ শব্দের রিং টোন অন্য জনের কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, মনোযোগ নষ্ট করে, শব্দ দূষণের নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে।
বর্তমান সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার্য পণ্যের মধ্যে স্মার্ট ফোন মানুষের জীবন যাপনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেকে নিজের খেয়াল খুশি মতো উঁচু শব্দে গান শোনে, ভিডিও দেখে, গেমস খেলে। কিন্তু পরিবেশ ও প্রতিবেশ দেখে না। এটা হতে পারে ক্লাস রুম, মিটিং রুম, সভা সমাবেশ, প্রার্থনা কক্ষ, পাবলিক সার্ভিস বাস, পার্ক ইত্যাদি। কারো জন্য যা বিনোদন, অন্য জনের কাছে চরম বিরক্তিকর। প্রায়শই দেখা যায় ভুক্তভোগীদের চরম ধৈর্য পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, ধৈর্য্য চ্যুতি ঘটলে বাঁধে বিপত্তি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় কিশোর এবং অশিক্ষিত লোকজন এই উপদ্রব সৃষ্টি করেন। সবচেয়ে জঘন্য কিছু লোক মেসেঞ্জার, হোয়াটস আপ ও ইমুতে অযাচিতভাবে অপরিচিত মেয়েদেরকে ভিডিও কল দিয়ে থাকে অথবা আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাঠায়।
এই সমস্ত আচরণ শুধু ফেস বুক বন্ধুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। অপরিচিত, অল্প পরিচিত ও ঘনিষ্ঠজনের কাছ থেকেও সবসময় এই সমস্যায় পড়তে হয়। সেলিব্রিটিদেরও বাদ দেয় না। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই আপত্তিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে মেয়েদের টার্গেট করে ছদ্মবেশী চরিত্রহীন পুরুষ। অনেকে পরিষ্কার পোশাকের নীচে নোংরা মন মানসিকতা লালন করে থাকে। সুযোগ পেলে নারীদের উত্ত্যক্ত করে থাকে।
আমাদের উচিত মোবাইল ও অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংযত হওয়া, প্রয়োজনে ব্যবহার করা এবং আসক্ত না হওয়া। সর্বোপরি উপকারী দিকগুলো গ্রহণ করা। আমাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার যেন অন্য জনের বিরক্তি ও ক্ষতির কারণ না হয়। সামগ্রিকভাবে আমাদের আচার আচরণ সভ্য, সুন্দর হোক এবং আমরা যেন অপরের মাথা ব্যথার কারণ না হই।