সেদিন বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাচ্ছিলাম। পথের ধারে হাজার হাজার লোকের ভিড় চোখে পড়ার মতো ছিল। মানুষের শোরগোল ও চেঁচামেচিতে পুরো শহরটাই যেন শব্দ দূষণের একটা উৎস হয়ে দাঁড়াল। সবাই আপন আপন ধান্দায় ব্যস্ত। আমি গাড়ির ভেতর থেকে মানুষের বৈচিত্র্য দেখার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ রাস্তার বাম পাশ থেকে একজন প্যান্ট-টাই পরা ভদ্র যুবক কানে হেডফোন দিয়ে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিল। আমাদের ড্রাইভার হুলুস্থুল হর্ন বাজাতে শুরু করল কিন্তু ভদ্র যুবকটির কানে হেডফোন থাকায় সে খেয়াল করতে পারেনি। টাস্ করে গাড়ির চাকায় ধাক্কা খেয়ে যুবকটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। তা দেখে আমাদের ড্রাইভার গাড়ি থামালেন। আশেপাশের লোকজন ইন্না-লিল্লাহ! ইন্না-লিল্লাহ! বলে বলে দৌড়ে দৌড়ে আসতে লাগল। লোকজন দৌড়ে এসে যুবকটিকে উদ্ধার না করে প্রথমে ড্রাইভার কোথায়? ড্রাইভার কোথায়? বলে চিৎকার করতে শুরু করল। ড্রাইভার ভয়ে পালাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। লোকেরা তাকে ধরে বেদম পেটালেন। আর বলতে লাগলেন এঙিডেন্ট করলি কেন? এঙিডেন্ট করলি কেন?
দৃশ্যটি দেখে আমি অবাক না হয়ে পারলাম না। যে এঙিডেন্টের পেছনে পুরাটাই যুবকটির দোষ, যে এঙিডেন্টে ড্রাইভারের বিন্দু মাত্রও দোষ নেই, সেখানেও কেন ড্রাইভারকে এতো মার খেতে হচ্ছে? রাস্তায় ভদ্র ছেলে-মেয়েরা কানে হেডফোন দিয়ে তাদের প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে হেঁটে হেঁটে রসের আলোচনা করেই যাবে। আর এঙিডেন্ট হলে ড্রাইভারকে মারবে এমন অত্যাচার জাতি আর দেখতে চায় না। তাই এমন এঙিডেন্ট রোধ করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং অবিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি সচেতনতার যে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মুহাম্মদ হেদায়ত উল্লাহ, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।