নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন দাইয়াপাড়া এলাকায় নিখোঁজের দুইদিন পর টয়লেট থেকে শাহাদাত হোসেন (৩২) নামে এক মুদি দোকানির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ শাহাদাতের মরদেহ দোকানের পেছনে একটি টয়লেট থেকে উদ্ধার করে। বাকি না দেয়ায় তাকে স্থানীয় মাদকসেবীরা ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন তার পিতা মো. শাহজাহানের।
ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের পিতা মো. শাহজাহানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার ছেলেকে স্থানীয় মাদকসেবী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমার ছেলের শরীরে ৫টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমার দোকানের পেছনে মাসুদ নামে এক সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীর বাসা রয়েছে। সে এখন জেলে। তার বাসায় ঐ এলাকার খারাপ ছেলেগুলোর আড্ডা বসে রাতে। আমার দোকানের পেছনে এলাকার খারাপ ছেলেরা সব সময় আড্ডা দেয়। তারা ইয়াবাসহ নানান ধরনের মাদক সেবন করতো। তারা আমার দোকানে ছেলের কাছে বাকিতে সিগারেটসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চাইত। আমার ছেলে দিতে না চাওয়াতে তারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে। আমি দোকানে থাকলে আমার ছেলের এই পরিণতি হতো না। আমি গত ২০ জুলাই নোয়াখালী বাড়িতে গিয়েছিলাম। ৩০ তারিখ থেকে ছেলের মোবাইল বন্ধ পেয়ে তার কোনো খোঁজ না পেয়ে আমি ৩১ জুলাই চলে আসি। এসে থানায় জিডি করি। আজকে (সোমাবার) দোকানের জামিদার আমাকে ফোন করে জানায় যে আমার ছেলের লাশ বাথরুমে পড়ে আছে। আমি পাগলের মতো ছুটে আসি। এসে দেখতে পাই আমার ছেলের গায়ের গামছাও তার পাশে পড়ে আছে। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আমি থানায় মামলা করেছি। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। রাত সাড়ে ১০টায় আবার তার সাথে ফোনে কথা হলে তিনি আজাদীকে জানান, আমি এখন থানায়। পুলিশ এলাকার ১৬-১৬ জন ছেলেকে ধরে এনেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করছে। র্যাবও এসেছে। তারাও তথ্য নিয়ে গেছে।
শাহাদাত হোসেন ও তার পিতা দুইজনেই আগ্রাবাদ দাইয়াপাড়া সোলাইমান কমিশনার বাড়ি এলাকায় একটি মুদি দোকান করতেন। তারা গুলবাগ আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। শাহাদাতের দুই শিশুসহ তার স্ত্রী থাকেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকার ভূইয়ারহাট গ্রামের বাড়িতে।
এই ব্যাপারে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন আজাদীকে জানান, আগ্রাবাদের দাইয়াপাড়া এলাকায় মুদির দোকানি শাহাদাৎ হোসেন হত্যার ঘটনায় তার পিতা বাদি হয়ে মামলা করেছেন। আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছি। আমরা যাদের এনেছি তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনেছি। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করিনি।
এদিকে রাত সাড়ে ১১টায় ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদ রানার সাথে কথা হল তিনি আজাদীকে জানান, মুদি দোকানদার শাহাদাতকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। ৩০ জুলাই দিবাগত রাতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার পিতা মামলা করেছেন। মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি। অজ্ঞাতনামা আসামি। এই ঘটনায় আমরা বেশ কয়েকজনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।