ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর কর্মসূচি দেওয়াকে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা মনে করছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী বৃহস্পতিবারের সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসে এই প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, সরকারের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিগণ তারা উস্কানিমূলক কথা বলছেন এবং একই সঙ্গে উস্কানিমূলক কাজও করছেন। যেমন যুবলীগ, তাদের প্রোগ্রাম ছিল ২৪ জুলাই। আমাদের কর্মসূচি ঘোষণা করার পরে তারা সেটা ২৭ জুলাই পরিবর্তন করেছেন। এটা পরিষ্কার, একটা সংঘাতমূলক অবস্থা সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই তারা এটা করছেন। এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যদি কোনোরকম কোনো আনট্রুয়ার্ড ইনসিডেন্ট হয়, তার সমস্ত দায়–দায়িত্ব কিন্তু সরকারকে বহন করতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল তাদের কর্মসূচির দিন বদলানোর বিষয়ে বলেন,মূলত রাজধানীতে যাতে কোনো ধরনের অরাজকতা না হয়, সেজন্যই আমরা তারিখ পরিবর্তন করেছি। সেদিন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ যৌথভাবে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে দিনভর শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে।
বিরোধীদের উপর দমন–পীড়ন, হয়রানির চিত্র তুলে ধরে ফখরুল বলেন, তারপরও আমরা অত্যন্ত সংযত অবস্থায়, শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করব, এই ভয়াবহ সংঘাতমূলক পরিস্থিতি পরিহার করবে আওয়ামী লীগ, তার যুবলীগ এবং সরকারও সেটা নিশ্চিত করবে। বিএনপির সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই ক্ষমতাসীনদের এমন কর্মসূচি–এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে এত কিছুর পরেও কোনো সমাবেশকে তারা আটকাতে পারেনি। মানুষ নৌকায় পার হয়ে, ভেলায় পার হয়ে, হেঁটে এসেছে। মানুষের আগ্রহ এত বেশি পরিবর্তনের জন্য যে তারা যেভাবে হোক এই মহাসমাবেশে উপস্থিত হবেন।
কর্মসূচির তিন দিন আগেও তার স্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেননি বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, মহাসমাবেশের জন্য আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি। আমরা আশা করছি যে, আজকের মধ্যেই এব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। আমরা আজ–কালের মধ্যে তা জানিয়ে দিতে সক্ষম হব। আমরা আশা করব, কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবেন এই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মহাসমাবেশ সফল করতে।
সমাবেশে জনগণের জন্য কী বার্তা থাকবে–সাংবাদিকদের প্রশ্নে ফখরুল বলেন, মহাসমাবেশের বার্তা একটাই– পদত্যাগ। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা। আন্দোলনে সফল হওয়ার আশা রেখে তিনি বলেন, এখানে তো জনগণ নেমে পড়েছে, এটা জনগণের আন্দোলন। এই আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে। আওয়ামী লীগ তো হরতাল ভাঙার দলে পড়ে গেছে। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জনগণের বেশিরভাগ আমরা বলব ৯৯ পার্সেন্ট এই পরিবর্তন চায়।
নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষণ নিয়ে এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্ববেক্ষক পাঠাবেন কি পাঠাবেন না, এটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা মনে করি, এখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন। এখানে যদি আমরা অংশগ্রহণ না করি, বিরোধী দল যদি অংশ না নেয়, তাহলে তো সেই নির্বাচন তো নির্বাচন হবে না। সুতরাং সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন হবে।