আউটার রিং রোডের পরিধি বাড়ছে

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ মার্চ, ২০২১ at ৭:১১ পূর্বাহ্ণ

আউটার রিং রোডের পরিধি বাড়ছে। মীরসরাই ইকোনমিক জোনের সাথে যুক্ত করতে চট্টগ্রাম মহানগরীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আউটার রিং রোড সীতাকুণ্ড পর্যন্ত সম্প্রসারিত হচ্ছে। মীরসরাই ইকোনমিক জোন থেকে আসা একটি রোডের সাথে আউটার রিং রোড যুক্ত করার নয়া প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আউটার রিং রোডকে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার প্রায় চার হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে প্রকল্প সারপত্র তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। নয়া এই সড়কে সীতাকুণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলের শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে রক্ষারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, শুরুতে চট্টগ্রাম মহানগরীর যান চলাচলে বড় ধরনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে আড়াই হাজার কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করা হয় আউটার রিং রোড নির্মাণ প্রকল্প। যান চলাচলের পাশাপাশি শহর রক্ষা, পর্যটন এবং আবাসনকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই প্রকল্পের সাথে কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীণ বঙ্গবন্ধু টানেলকে যুক্ত করে দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ বিস্তৃত এলাকার যান চলাচলে নয়া মাত্রা যোগের উদ্যোগ নেয়া হয়। পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের সন্নিকট পর্যন্ত ১৫ .২ কিলোমিটারের চার লেন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাস্তাটির প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটারের আউটার রিং রোডকে বন্দর টোল রোডের সাথে যুক্ত করে ফৌজদারহাট পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সাগরিকা থেকে টোল রোডকে সীতাকুণ্ডের বাঁশাবাড়িয়া পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই রোডের সাথে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এবং বাঁশবাড়িয়ায় দুইটি ফিডার রোড তৈরি করে ঢাকা চট্টগ্রাম রোডের সাথে যুক্ত করা হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আউটার রিং রোডের সাথে টানেল এবং মীরসরাই ইকোনমিক জোনের বিপুল সংখ্যক গাড়িকে যুক্ত করতে বিশেষ এই প্রকল্প গ্রহন করেছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে প্রকল্পটির কথা স্বীকার করে বলেন, আউটার রিং রোডকে সাগরিকা থেকে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অপরদিকে মীরসরাই ইকোনমিক জোন থেকে একটি রাস্তা বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত আনা হচ্ছে। ইকোনমিক জোন থেকে আসা রাস্তাটি দুই লেনের। ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি নির্মান করবে। দুই লেনের ওই রাস্তার সাথে বাঁধবাড়িয়াতে চার লেনের আউটার রিং রোড যুক্ত হবে।
তিনি বলেন, সাগরিকা থেকে বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি নির্মাণের পাশাপাশি একই প্রকল্পের আওতায় ফিডার রোড এবং সার্ভিস রোডও রয়েছে। সবকিছু মিলে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে এই প্রকল্পে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীতাকুণ্ডের দক্ষিনাঞ্চলে গড়ে উঠা শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে প্রকল্পটিতে। আউটার রিং রোডের সম্প্রসারিত অংশের কারনে যাতে কোন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ওই এলাকাটিতে ফ্লাইওভার তৈরি করে দেয়া হবে। শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের কার্যক্রম চলবে নিচে, উপর দিয়ে চার লেনের ফ্লাইওভারে আউটার রিং রোড চলে যাবে।
তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু টানেল, চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল এবং মীরসরাই ইকোনমিক জোনে অপারেশন শুরু হবে। এতে গাড়ি চলাচল যে পরিমান বাড়বে তাতে আউটার রিং রোড সম্প্রসারণের কোন বিকল্প নেই বলেও কাজী হাসান বিন শামস মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের পদস্থ একজন কর্মকর্তা গতকাল দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে জানান, মীরসরাই ইকোনমিক জোন থেকে একটি রাস্তা সীতাকুণ্ডের দিকে আসবে। বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে রাস্তাটি সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া পর্যন্ত আনা হবে। ওখানে রাস্তাটি রিং রোডের সাথে যুক্ত হবে। এতে করে ইকোনমিক জোনের পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল অনেক বেশি গতিশীল হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বে টার্মিনালের গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও আউটার রিং রোড বড় ধরনের ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র শবে মেরাজ আজ
পরবর্তী নিবন্ধসাত কোটি বাঙালির নেতা শেখ মুজিবের নির্দেশ পালন করুন : ভাসানী