৪০ হাজার লাইসেন্স বিআরটিএর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাইসেন্সগুলো প্রস্তুত হয়ে ঢাকা থেকে চলে এলেও তা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টদের অনাগ্রহে বিআরটিএ কার্যালয়ে পড়ে আছে লাইসেন্সগুলো। ইতোমধ্যে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে লাইসেন্সগুলো মালিকদের হস্তান্তর করার চেষ্টা করেছে বিআরটিএ। নানাভাবে চেষ্টা করার পর ৯০ হাজারের মধ্যে ৫০ হাজার লাইসেন্স মালিকের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, ভুয়া ও জাল লাইসেন্স ঠেকাতে গত কয়েক বছর ধরে দেশের সব ড্রাইভিং লাইসেন্স ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাপানো হয়। প্লাস্টিক কার্ডে এসব লাইসেন্স বিআরটিএ নিজে না করে আলাদা কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু সরকারের সাথে চুক্তির শর্ত নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় টানা প্রায় তিন বছর লাইসেন্স ছাপানো বন্ধ থাকে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিন বছরে সারা দেশে ১৩ লাখের বেশি লাইসেন্স আটকা পড়ে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে আটকা পড়েছিল ৯০ হাজার। লাইসেন্স ছাপানো বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ বেকায়দায় পড়ে। লাইসেন্স না পেয়ে এদের অনেকে বিদেশ যেতে পারেনি।
প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকা লাইসেন্স বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে ছাপানোর ব্যবস্থা করে সরকার। বিশেষ করে সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব এবং বিআরটিএর নতুন চেয়ারম্যান সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে আটকে পড়া ১৩ লাখের বেশি লাইসেন্স ছাপানোর দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এই প্রতিষ্ঠান স্বল্প সময়ে লাইসেন্সগুলো ছাপানো শুরু করে। তবে সড়ক ও যোগাযোগ সচিব এবং বিআরটিএর চেয়ারম্যানের বিশেষ নির্দেশনায় চট্টগ্রামের লাইসেন্সগুলো আগে প্রস্তুত করে পাঠিয়ে দেয়া হয়। গত জুনে চট্টগ্রামে ৯০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স চলে আসে।
৫ মাসে উক্ত লাইসেন্সগুলোর মধ্যে ৫০ হাজার লাইসেন্স আবেদনকারীর হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএর উপ-পরিচালক তৌহিদুল হোসেন। তিনি বলেন, অনেক লাইসেন্স পড়ে আছে। আমরা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছি। বহু মানুষ নিয়েছে। কিন্তু আরো অনেক পড়ে আছে। লাইসেন্স নিতে আসা মানুষের সংখ্যা স্লো।
তিনি জানান, বর্তমান সচিব মহোদয় দায়িত্ব নেয়ার পর তার নির্দেশে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার চট্টগ্রামের আবেদনকারীদের ৯০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্ভাব্য কম সময়ের মধ্যে আবেদনকারীদের হাতে তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম জেলার ড্রাইভিং লাইসেন্সগুলো দেশের অন্য অঞ্চলের আগে প্রস্তুত হয় এবং এখানে এসে পৌঁছে।
গত জুন মাসে চট্টগ্রামের লাইসেন্সগুলো আসে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্দেশনা মোতাবেক আমরা দ্রুত বিতরণ শুরু করি। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেছি। নিয়ম মোতাবেক মোবাইল ফোনে মেসেজও করা হয়। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার আবেদরকারী তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেয়েছেন। অবশিষ্ট অনেকের কাছে মেসেজ গেলেও অজ্ঞাত কারণে তারা লাইসেন্স নিতে আসছেন না। জটিলতার কারণে এসব আবেদনকারীকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। তাই দ্রুত তাদের হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স তুলে দিতে চাই। মেসেজপ্রাপ্ত আবেদনকারীদের বিআরটিএ চট্টগ্রাম অফিস থেকে তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন তিনি।