চট্টগ্রাম কাস্টমসে কিছুতেই থামছে না মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ঠেকাতে জরিমানার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, একশ্রেণীর অসাধু আমদানিকারক নিত্যনতুন কৌশলে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানিকৃত পণ্য ছাড় করিয়ে নিয়ে যান। এ কাজে সহযোগী হয় কিছু অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে এক হাজার ৭৩৯ চালান লক করে কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা। এরমধ্যে অনিয়ম পাওয়া যায় ৭৪১টি চালানে। এসব চালান থেকে জরিমানাসহ রাজস্ব আয় হয় ১০৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এআইআর শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২২২টি চালান লক করা হয়। এরমধ্যে ১১৮ চালানে অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব চালানে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয় ১৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগস্টে চালান লক করা হয় ২১৮টি। এরমধ্যে ৯৭টিতে অনিয়ম পাওয়া যায়। চালানগুলোতে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয় ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে ২৬১ চালান লক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে অনিয়ম পাওয়া যায় ১২৬টিতে। এসব চালানে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয় ১১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অক্টোবরে চালান লক করা হয় ১২৮টি। এরমধ্যে ৫২টি চালানে অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব চালানে জরিমানাসহ রাজস্ব আহরিত হয় ১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। নভেম্বরে ১১১টি চালান লক করা হয়। এরমধ্যে ৯১টি চালানে পাওয়া অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব চালান থেকে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অন্যদিকে ডিসেম্বরে ১৬২টি চালান লক করা হয়। এরমধ্যে ৯৪টিতে অনিয়ম পাওয়া যায়। চালানগুলো থেকে জরিমানাসহ রাজস্ব আয় হয় ১৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। জানুয়ারিতে চালান লক করা হয় ১৫০টি। এরমধ্যে ৯৪টিতে অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব চালানে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয় ১৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে ১৩৭টি চালান লক করা হয়। এরমধ্যে ৭২টিতে অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব চালানে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয় ১৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। মার্চে ১৯৯টি চালান লক করা হয়। এরমধ্যে ৪৪টিতে অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব চালানে জরিমানাসহ রাজস্ব আয় হয় ৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এপ্রিলে লক করা হয় ১৩২টি চালান। এসবের মধ্যে ২৭টি অনিয়ম পাওয়া যায়। চালানগুলোতে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় হয় ২ কোটি ৮ লাখ টাকা। মে মাসে লক করা হয় ৯৯টি চালান। এসবের মধ্যে ৬টিতে অনিয়ম পাওয়া যায়। চালানগুলোতে জরিমানাসহ রাজস্ব আদায় ৬৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে প্রথম ১১ মাসে মোট এক হাজার ৭৩৯ চালান লক করা হয়। অনিয়ম পাওয়া যায় ৭৪১টি চালানে। এসব চালান থেকে জরিমানাসহ রাজস্ব আয় হয় ১০৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (এআইআর শাখা) দৈনিক আজাদীকে বলেন, কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশে বর্তমানে কাস্টমসের প্রিভেন্টিভ কার্যক্রম অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে। অনিয়মের দায়ে আমদানিকারক ও সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। সরকারি রাজস্ব সুরক্ষায় চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা তৎপর রয়েছে।












