চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ৯ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের সৈয়দ নগর ৩ নম্বর ওয়ার্ড সিকদার পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মৃতের নাম মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। সে একই এলাকার প্রবাসী মোহাম্মদ ইয়াকুবের ছেলে এবং সৈয়দ নগর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।
পরিবারের স্বজনদের কেউ বলছেন, মায়ের বকুনি খেয়ে নিজ কক্ষে আত্মহত্যা করেছে সে। আবার কপালে আঘাতের চিহ্ন থাকায় বিষয়টিকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে পুলিশ অপমৃত্যু মামলা নিয়েছে এবং ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সৈয়দ নগর জামে মসজিদ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইমতিয়াজ তার পাঁচ বছর বয়সী চাচাতো বোনের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে। এই নিয়ে তার মা তাকে বকাঝকা করে এবং পরদিন পরীক্ষা থাকায় পড়তে বসতে বলেন। পরে মা রান্না করতে গেলে কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে দেখেন রুমের দরজা বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না পেয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখেন ইমতিয়াজ জানালার পাশে বসে আছে। পরে পরিবারের লোকজনকে ডেকে দরজা ভেঙে দেখা যায়, সে মায়ের ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়েছে।
নিহতের কপালে আঘাতের চিহ্ন থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এলে এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু তা জানা যাবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, নিহত শিশুটি তার পারিবারিক আত্মীয়। ঘটনার পর তার দাদা ফোনে ঘটনাটি তাকে জানান এবং বলেন, মায়ের বকা খেয়ে সে একটি কক্ষে গিয়ে রুম বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘসময়েও সে বের না হলে দরজা ভেঙে গিয়ে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। তার কপালে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একেকজন একেকভাবে বিষয়টি বর্ণনা করছেন। তবে সে কিভাবে মারা গেল তা নিয়ে রহস্য রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে সন্তানের মৃত্যুর খবরে প্রবাস থেকে ছুটে আসেন বাবা। এলাকায় এমন মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মা–বাবার আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠেছে। প্রবাসে বাবার কাছে নানা কিছুর বায়না ধরা মাদ্রাসা ছাত্র ইমতিয়াজ আর কিছু চাইবে না। এসব বলে আহাজারি করে কাঁদছে সন্তানহারা পিতা ইয়াকুব। শেষবারের মত পিতার কাঁধে চড়ে ইমতিয়াজ চির নিদ্রায় শায়িত হলেন।










