৮০০ কোটি বছর আগের বিস্ফেরণের সংকেত এল পৃথিবীতে

| সোমবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ

মহাবিশ্বের অনেক গভীর জায়গা থেকে পৃথিবীতে পৌঁছেছে ক্ষমতাধর এক শক্তিচ্ছটাএমনই উঠে এসেছে এক গবেষণায়। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দ্রুতগতির রেডিও বিস্ফোরণ পৃথিবীতে পৌঁছাতে সময় লেগেছে আটশ কোটি বছর, যা এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে দূরবর্তী জায়গা থেকে সংকেত পাওয়ার ঘটনা। এটি এতটাই ক্ষমতাধর যে, সূর্য থেকে যে পরিমাণ শক্তি বেরোতে ৩০ বছর লাগে, এটি থেকে ওই একই পরিমাণ শক্তি বেরিয়েছে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে। ফাস্ট রেডিও বার্স্ট বলতে এমন স্বল্পমেয়াদি শক্তির বিস্ফোরণকে বোঝায়, যা মহাশূন্যের অজানা কোনো জায়গার অস্বাভাবিক তীব্র কার্যক্রম থেকে ঘটে থাকে। এর গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন। তবে, এর সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হিসেবে বহির্জাগতিক প্রযুক্তি থেকে শুরু করে খসে পড়া নক্ষত্র সব বিষয়ই উল্লেখ করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন আবিষ্কৃত বিস্ফোরণ একাধিক ছোট আকারের ছায়াপথ একত্রিত হওয়ার কারণেও ঘটতে পারে। আর এর উৎপত্তিস্থল নিয়ে প্রচলিত তত্ত্বগুলোকেও সমর্থন করে বিষয়টি। তবে, এর তীব্রতা নিয়ে কোনো সঠিক ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে, এর নির্গমন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বোঝাও মানুষের পক্ষে জটিল। আমরা এমন বিশাল বিস্ফোরণের শক্তির উৎস সম্পর্কে এখনও না জানতে পারলেও গবেষণাপত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে, মহাবিশ্বের নিয়মিত ঘটনাগুলোর একটি হল রেডিও বিস্ফোরণ। আর বিভিন্ন ছায়াপথে এমন কার্যক্রম শনাক্ত করতে ও মহাবিশ্বের গঠনপ্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে এটি আমাদের সহায়তা দেবে।বলেন সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি’র সহকারী অধ্যাপক রায়ান শ্যানন। ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহাবিশ্বের কয়েকটি অজানা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে এ ধরনের বিস্ফোরণ। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, এর ওজন কত। তবে, এ মূহুর্তে এমন প্রশ্নের বিশ্বাসযোগ্য ফলাফল খুঁজে পাওয়া যায়নি। মহাবিশ্বের স্বাভাবিক মৌলগুলো বিবেচনায় নিলে, যেসব পরমাণু দিয়ে সবকিছু তৈরি হয়েছে, সেখানে অর্ধেকের বেশিই আজকের দিনে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।বলেন অধ্যাপক শ্যানন। আমাদের ধারণা, সেইসব হারিয়ে যাওয়া বস্তু মহাশূন্যের কোনো ছায়াপথের মধ্যে লুকিয়ে আছে। তবে, এগুলো এতটাই গরম হতে পারে বা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা সাধারণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেখা সম্ভব নয়। দ্রুতগতির রেডিও বিস্ফোরণ এমন আয়নিত বস্তু শনাক্ত করতে পারে। এমনকি এগুলো এমন জায়গাতেও সকল ইলেকট্রন দেখতে পারে, যেগুলো প্রায় খালি। ফলে, ছায়াপথের মধ্যবর্তী জায়গায় কী পরিমাণ বস্তু রয়েছে, তা পরিমাপ করার সুযোগ পাব আমরা। বিস্ফোরণটি চিহ্নিত হয়েছিল গত বছর, জাপানের এক টেলিস্কোপের মাধ্যমে। পরবর্তীতে গবেষকরা অন্যান্য টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এ অনুসন্ধান যাচাইয়ের পাশাপাশি এর খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তারিত পরীক্ষা চালিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৫.০৫ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধখারকিভে ডাকঘরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৬