বাঁশখালী উপকূলীয় বেড়িবাঁধের কাজ ২০১৫ সালে শুরু হয়। কিন্তু ৮ বছরেও পুরো বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হয়নি। ছনুয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় কাজ এখনো বাকি রয়েছে। প্রতিটি জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ে আঘাতের পর ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা হলেও এর সুফল পাওয়া যায় না। কারণ আবারো ভেঙে যায়।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে উপকূলীয় খানখানাবাদের প্রেমাশিয়া কদমরসুল, ছনুয়া, গন্ডামারা, সাধনপুরের বৈলগাও, চাম্বল ও শেখেরখীলের অভ্যান্তরীণ এলাকা, জলকদর ও জালিয়াখালী খাল হয়ে শীলকূপের মনকিচর ও কাহারঘোনা, কাথরিয়া এলাকায় লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রায় ৫ শতাধিক একর জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়। সম্প্রতি উপকূলবাসীর দুঃখ লাঘবে বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
পাউবো সূত্র জানায়, ২০১১-১২ সালের প্রকল্পের মূল জরিপ হয়। ২০১৩ সালে বাঁধের নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ২০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়। পরে নির্মাণ সামগ্রী দাম বাড়া ও ঠিকাদারদের আপত্তির মুখে ২০১৫ সালে বাঁধ নির্মাণে ২৫১ কোটি ২৯ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার অনুমোদন দেয় সরকার। এরমধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৯০ কোটি টাকা ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১২০ কোটি টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত ৩০ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে।
ছনুয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম হারুনুর রশিদ বলেন, আমার এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় জনগণের দুঃখ শেষ হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে কাজ শেষ করার জন্য দাবি জানান তিনি। খানখানাবাদের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, কদমরসুল এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে সম্প্রতি সিত্রাংয়ের সময় লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় জনগণের ভোগান্তি হয়েছে। বেড়িবাধেঁর কাজ শেষ করা গেলে উপকূলের জনগণের দুর্ভোগ লাগব হতো।
সাধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে এম সালাহ উদ্দিন কামাল বলেন, ইউনিয়নের রাতা খোর্দ ও বৈলগাঁও এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় জনগণ আতঙ্কে থাকে। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় আমার এলাকায় কয়েকটি পয়েন্টে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে ফসলের ক্ষতি সাধন হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে ভাঙা বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্ববাধায়ক প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমাসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। পরিদর্শনের পর গন্ডামারা, শেখেরখীল, চাম্বল, খানখানাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধের ভাঙা স্থান সংস্কার কাজ জরুরি ভিত্তিতে শুরু করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রকাশন চাকমা বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের ফলে বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে সব এলাকায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিদর্শনের পর জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। তবে সে কাজের জন্য কি পরিমান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা এখন নিশ্চিত করা হয়নি বলে তিনি জানান।