চট্টগ্রাম কাস্টমসে অনলাইন নিলামে এবারও বিডারদের সাড়া মেলেনি। ফেব্রিক্সসহ বিভিন্ন ধরনের ৭৯ লট পণ্যের মধ্যে ৩৫ লটের একটি দরপত্রও জমা পড়েনি। এছাড়া বাকি ৪৪ লটে অংশ নিয়েছেন ১৬ জন বিডার (নিলামে অংশগ্রহণকারী)। নিলামে অনলাইনে দরপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা ছিল গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইনে নিলামে এখনো অনেক বিডার অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেননি। তাই অংশগ্রহণকারী বিডারের সংখ্যা কম ছিল।
জানা গেছে, ৭৯ লট এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে–বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিঙ, পেপার হ্যাং ট্যাগ, প্লাস্টিকের খেলনা, ক্যাট কেইজ, পিভিসি রিবন, পিভিসি রেজিন, মেটাল স্ট্যান্ড পার্টস অব সুইং মেশিন, পলিপ্রোপিলিন, ক্যাটালগ, ফিল্টার মাস্টার ব্যাচ, গার্মেন্টস এঙেসরিজ, প্লাস্টিক বাটন, হাইড্রোগার্ড টেপ, ব্লিচিং আর্থ, ফ্লাগ লেবেল, সিরামিক টাইলস, ওডেন পেলেটস, টপ হ্যাংগার, ইঞ্জিন অয়েল, তেঁতুল বিচি, প্রিন্টেড বুক, রিপ্লেটিভ পাইপিং, মোবাইল ফোন কাভার, ওয়াটার পাম্প, এলইডি বাল্ব, টিউব লাইট, রাউন্ড লগ, ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম ও গ্রাউন্ডিং ব্লকস।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ই–অকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। এছাড়া একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এছাড়া সর্বশেষ গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ধরনের ২৩ লট পণ্য এবং গত ৩১ ডিসেম্বর ১০৮ লট পণ্য ই–অকশনে তোলা হয়। এরমধ্যে দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও ১০৮ লট পণ্যের এখনো বিক্রয় অনুমোদন হয়নি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক বশির ইকবাল কাদেরী বলেন, ই–অকশন নিয়ে আসলে বিডারদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। যার ফলে সাধারণ বিডাররা ই–অকশন থেকে বারবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ই–অকশন মানে হচ্ছে দ্রুত নিলাম। এখানে ম্যানুয়াল নিলামের মতো মাসের পর মাসের সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। তাহলে ই–অকশন করে লাভ কি? এছাড়া পদ্ধতিগতভাবে এটি এখনো ম্যানুয়াল নিলামের মতো হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা ও অনলাইন নিলামের সুপারভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান নান্না দৈনিক আজাদীকে বলেন, অনলাইনে দরপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে। এখন নিলাম কমিটি নিলামের আইন মেনে সর্বোচ্চ দরদাতার অনুকূলে বিক্রয় অনুমোদন দেবে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো চার্জ পায় না।